সারা বাংলা

মাকে নির্যাতন মামলায় ছেলে-পুত্রবধূ গ্রেপ্তার 

জমির দলিল ও স্বর্ণালংকার না দেওয়ায় মা রীতা রানী বসুকে নির্যাতনের মামলায় ছেলে শুভ বসু ও পুত্রবধূ জুথী মৃধাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) রাত ৯টার দিকে বরগুনার বেতাগীর গ্রামীন ব্যাংক রোড এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

এর আগে, গত ৫ সেপ্টেম্বর মাকে নির্যাতনের অভিযোগ এনে বেতাগী থানায় মামলা করেন ভুক্তভোগী রীতা রানীর ছোট ছেলে শোভন বসু। মামলার অন্য আসামিরা হলেন- লীলা রানী মুখা এবং সুভাষ চন্দ্র মৃধা। 

মামলা সূত্রে জানা যায়, স্বামী শিবু লাল বসু মারা যাওয়ার পর থেকে জমির দলিল ও স্বর্ণালংকার নেওয়ার জন্য রীতা রানী বসুকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতে শুরু করেন তারই বড় ছেলের বউ জুথি মৃধা। ছেলের সামনে মাকে নির্যাতন করা হলেও চুপ থাকতেন শুভ বসু। পরে তিনিও মাকে নির্যাতন শুরু করেন।

গত ২ সেপ্টেম্বর বিকেল ৫টার দিকে পুত্রবধূর নিজ নামে জমির দলিল ও স্বর্ণালংকার নিতে মাকে নির্যাতন শুরু করেন জুথী মৃধা ও তার ছেলে শুভ বসু। নির্যাতনে গুরুতর আহত হলেও ৫৫ বছর বয়সী বৃদ্ধাকে চিকিৎসা না করিয়ে ঘরে আটকে রাখেন ছেলে ও তার স্ত্রী। পরের দিন রীতা রানী বসুর ছোট ছেলে (মামলার বাদী) শোভন বসু মাকে উদ্ধার করে প্রথমে বেতাগী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে বরিশাল শেরে-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। গত ৫ সেপ্টেম্বর শোভন বসু বেতাগী থানায় মামলা করেন। 

মামলার বাদী শোভন বসু রাইজিংবিডিকে বলেন, ‌‘আমার মাকে দফায় দফায় নির্যাতন করেছে ভাইয়ের বউ এবং আমার ভাই। বড় ভাইয়ের এমন কর্মকাণ্ডে আমি লজ্জিত। বাধ্য হয়ে মামলা করেছি। নিজের মাকে এভাবে কোনো সন্তান নির্যাতন করতে পারে না। আমার বাবা দুই বছর আগে মারা যান। এরপর থেকেই আমার মার কাছ থেকে জমি নিজেদের নামে লিখে নিতে এবং স্বর্ণালংকার নিতে নির্যাতন শুরু করেন।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘গত দুই বছরে আমার মা কখনো আমাকে এসব বিষয়ে বলেননি। সব সহ্য করেছেন তিনি। এবার নির্যাতন সহ্য করতে পারেননি, তাই আমাকে জানিয়েছেন। আমি মা নির্যাতনের বিচার চাই‌।’ 

বেতাগী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘ঘটনা মর্মান্তিক। মামলায় অভিযুক্ত দুই জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) আদালতে পাঠানো হবে।’