হাত পায়ে অনেক সময় খিল ধরে, টান লাগে এবং তীব্র ব্যথা অনুভব হয় এইসব লক্ষণ দেখা দিলে অবহেলা করবেন না। কারণ এর সঙ্গে রক্তনালীতে ব্লক হওয়ার সম্ভাবনা জড়িয়ে আছে। চিকিৎসকেরা বলেন, হাত বা পায়ের রক্তনালীতে ব্লক হলে এসব অঙ্গ অবশ হয়ে যেতে পারে। ফলে সাত-আট ঘণ্টার মধ্যে রোগী পঙ্গু হয়ে যেতে পারেন। হাত-পায়ের রক্তনালীর অ্যাটাক কখনো হঠাৎ হতে পারে আবার কখনো ধীরে ধীরে এই সমস্যা বাড়তে পারে।
ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতালের ভাসকুলার সার্জন ডা. সাকলায়েন রাসেল বলেন, ‘রক্তনালী হার্টের গায়ে থাকে। হার্টে ব্লক হলে আমরা বলি হার্ট অ্যাটাক, যদি ব্রেনে হয় তাহলে বলি স্ট্রোক; যদি হাতে বা পায়ে হয় তখন আমরা এটিকে লেগ অ্যাটাক বা হ্যান্ড অ্যাটাক।’
‘হাত-পায়ের রক্তনালীর অ্যাটাকটা হঠাৎ করে হতে পারে আবার ধীরে ধীরেও হতে পারে। যদি হঠাৎ করে এই সমস্যা দেখা দেয় তাহলে হাত বা পায়ে তীব্র ব্যথা অনুভূত হয়। কিছু সময় পরে দেখা যায় ব্যথা আস্তে আস্তে কমে যাচ্ছে, এবং যে জায়গায় ব্যথা হয়েছিল সেই জায়গা আস্তে আস্তে ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে। এই লক্ষণ দেখা দিলে পঙ্গু হওয়ার আশঙ্কা আছে। বিশেষ করে এভাবে সাত বা আট ঘণ্টা অতিক্রম করলে আক্রান্ত হাত -পা নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এভাবে সাত-আট ঘণ্টা অতিক্রম করলে হাত বা পা কেটে ফেলা ছাড়া কিছুই করার থাকে না।’— যোগ করেন ডা. সাকলায়েন রাসেল।
এই সার্জনের পরামর্শ, কারও যদি হঠাৎ করে হাতে কিংবা পায়ে তীব্র ব্যথা হয় তাহলে দ্রুত একজন ভাসকুলার সার্জনের পরামর্শ নেওয়া উচিত। এই সমস্যা দেখা দিলে শুরুতেই ব্যথানাশক ওষুধ সেবন করা যাবে না। তার আগে দেখা দরকার হাত কিংবা পায়ের পালসগুলো ঠিক আছে কিনা। সেই অনুযায়ী একজন ভাসকুলার সার্জন দ্রুত চিকিৎসা দেবেন।
ডা. সাকলায়েন বলেন, ‘লেগ অ্যাটাক বা হ্যান্ড অ্যাটাকের আরেকটি দিক হচ্ছে যে রোগীর হাত পা ধীরে ধীরে নষ্ট হয়। এ ধরনের রোগীদের হাত বা পায়ে খিল ধরার মতো অবস্থা হয়। আঙুলে কিংবা আঙুলের মাথায় ঘা হতে থাকে। বিশ্রামের সময় ব্যথা বেশি অনুভূত হয়। হাত বা পায়ে নরমাল ব্লক হলে এই ব্লক সরানোর জন্য আমরা ডুপ্লেক্স পরীক্ষা নিরীক্ষা করি। যেগুলো হচ্ছে আল্ট্রাসনোগ্রাম এবং এনজিওগ্রাম। প্রয়োজনে বাইপাসও করা লাগে। হার্টে যেমন বাইপাস করা হয় তেমনি হাতে বা পায়েও বাইপাস করা হয়। অনেক সময় রিংও পরানো হয়।’