বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেছেন, ভূমি অফিস, হাসপাতালসহ সরকারি দপ্তরে দালালি আর টাকা দিয়ে কাজ করার জন্য, জনতার ওষুধ কোম্পানির কাছে বিক্রি করার জন্য ছাত্র-জনতা এই অভ্যুত্থান ঘটায়নি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে বিগত ১৬ বছরে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সবচেয়ে বড় যে ক্ষতি করেছেন, তিনি তার আওয়ামী লীগকেই শুধু ফ্যাসিস্ট বানাননি; তিনি দেশকে শুধু ফ্যাসিস্ট বানাননি, তিনি ফ্যাসিস্ট বানিয়েছেন প্রত্যেক মানুষকে। এ জায়গা থেকে উত্তোরণ ঘটাতে হবে।
বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে টাঙ্গাইল শহীদ স্মৃতি পৌর উদ্যানে তিনি এ সব কথা বলেন।
সারজিস আলম বলেন, ‘আমরা এক ফ্যাসিস্টকে দেশ ছাড়া করেছি, অন্য ফ্যাসিস্টকে জায়গা ছেড়ে দেয়ার জন্য নয়। কেউ যদি এখনও সয়নে-স্বপ্নে কিংবা ঘুমের মধ্যে স্বপ্ন দেখেন, আবারও ছাত্র-জনতাকে ডমিনেট করে ফ্যাসিস্ট হয়ে উঠবেন; তারা যেন ওই শেখ হাসিনাকে দেখে শিক্ষা নেয়।’
সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেন, ‘আমার ভাই যখন রক্তাক্ত হয়ে হাসপাতালে তখন সেই হামলাকারী কতিপয় পুলিশ কীভাবে উন্মুক্ত রাস্তায় ঘোরাফেরা করে? ওই ফাসিস্ট আওয়ামী লীগের দোসর, চাটুকার, তেলবাজ তোষামতকারী যে সকল আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য রয়েছেন, তারা যদি নিজেদের শুধরিয়ে না নেয়; তাহলে নেত্রী হাসিনার মতোই দেশত্যাগ হতে হবে।’
শিক্ষার্থীদের রাজনীতিতে আসার বিষয়ে সারজিস বলেন, ‘আগামীর যে বাংলাদেশ হবে, সেই বাংলাদেশের নেতৃত্ব শিক্ষার্থীরা দেবে। আমরা চাই, ওই সংসদে গিয়ে আপনি একজন এমপি হবেন, একজন মন্ত্রী হবেন, একজন প্রধানমন্ত্রী হবেন। আপনাদের ওই সংসদে একজন পলিসি মেকার হিসেবে যেতে হবে। কারণ সব কিছু হয় সংসদ থেকে এবং সব পলিসি মেকিং হয় ওই সংসদ থেকে। টাঙ্গাইলের ওই মেধাবী তরুণ প্রজন্ম যদি সংসদে প্রতিনিধিত্ব না করে তাহলে কারা করবে?
শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের উদ্দেশে সারজিস বলেন, আপনারা অভিভাবকরা যেমন স্বপ্ন দেখতেন, আপনার ছেলে শিক্ষক, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, পাইলট, ম্যাজিস্ট্রেট হবে, তেমনি আপনি স্বপ্ন দেখবেন, আপনার ছেলে দেশের অন্যতম সেরা একজন রাজনীতিবিদ হয়ে উঠবে।
এতে আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকার সমন্বয়ক আব্দুল্ল্যাহ সালেহীন অয়ন, মোবাশ্বিরুজ্জামান হাসান, মিতু আক্তার, রাকিবুল হাসান, রফিকুল ইসলাম আইনি ও ইলমা খন্দকার এ্যানি প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারী ইফফাত রাইসা নুহা।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। অনুষ্ঠান শেষে সারজিস আলম সমাবেশে আসা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সেলফি তোলেন।