দূষণ রোধে এবং জেলেদের ছেঁড়া জাল সংরক্ষণে পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতের নান্দনিক ডাস্টবিন স্থাপন করা হয়েছে। কুয়াকাটা জিরো পয়েন্ট ও আশপাশে মাছ ধরা ট্রলার, মাছ ও বোতল আকৃতির চারটি ডাস্টবিন স্থাপন করা হয়েছে। স্থানীয়দের আশা, পর্যটক, স্থানীয় ব্যবসায়ী এবং জেলেরা এই ডাস্টবিনগুলো ব্যবহার করবেন। ফলে সমুদ্র দূষণ অনেক কমে আসবে।
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাৎস্য বিজ্ঞান অনুষদের অধ্যাপক ড. সাজেদুল হক এই ডাস্টবিনগুলো স্থাপন করেন। এ কাজে তাকে সহায়তা করেছে যুক্তরাষ্ট্রের গ্লোবাল ঘোস্ট গিয়ার ইনটিশিয়েটিভ ও ওশান কনজারভ্যান্সি সংস্থা।
জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে পর্যটকসহ ব্যবসায়ীদের অসচেতনতার কারণে দূষিত হচ্ছে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত। বিশেষ করে যত্রতত্র ময়লা আবর্জনা ফেলার কারণে পঁচা দুর্গন্ধে অতিষ্ট থাকেন দেশের অন্যতম এই পর্যটন কেন্দ্রে বেড়াতে আসা মানুষ ও স্থানীয় বাসিন্দারা। এ কারণে পর্যটক ও স্থানীয়রা যাতে আবর্জনা নির্দিষ্ট স্থানে ফেলেন সে জন্য স্টিল দিয়ে তৈরি মাছের বড় আকৃতির ডাস্টবিনটি বসানো হয়েছে কুয়াকাটা চৌরাস্তায়। বড় বোতল আকৃতির ডাস্টবিন বসানো হয়েছে সৈকত লাগোয়া চৌরাস্তার পশ্চিম পাশে। মাছধরা ট্রলার আকৃতির ডাস্টবিন বসানো হয়েছে জিরো পয়েন্টে। অপরটি ডাস্টবিনটি বসানো হয়েছে ফিস ফ্রাই মার্কেটে। ইতোমধ্যে এসব ডাস্টবিন ব্যবহার করতে শুরু করেছেন সবাই।
খুলনা থেকে আসা পর্যটক মুক্তা-সোহেল দম্পতি জানান, এর আগেও আমরা কুয়াকাটায় এসেছি। তখন সৈকতের পারে পৌরসভার স্টিকার লাগানো কিছু ডাস্টবিন দেখেছিলাম। সেগুলো খুবই অপিরচ্ছন্ন ছিলো। এবার এসে ব্যতিক্রম কিছু ডাস্টবিন দেখেছি। পানির বোতল সৈকতে না ফেলে নতুন ডাস্টবিনে ফেলেছি। যারা এই ডাস্টবিন তৈরি করেছেন তাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
সৈকতের ফুসকা ব্যবসায়ী রহিম মিয়া বলেন, ‘আবর্জনা ফেলার ডাস্টবিনগুলো দেখতে সুন্দর হওয়ায় পর্যটকরা সেটি ব্যবহার করতে শুরু করেছেন। আমরাও নানা বর্জ্য সেখানে নিয়ে ফেলেছি। যারা এই ডাস্টবিন তৈরি করেছেন তাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাৎস্য বিজ্ঞান অনুষদের অধ্যাপক ড. সাজেদুল হক বলেন, ‘প্লাস্টিক ও পলিথিন যত্রতত্র ফেলায় দূষিত হচ্ছে সমুদ্র। এছাড়া, জেলেদের ছেঁড়া জাল পানিতে ফালানোর কারণেও সমুদ্র দূষিত হয়। দীর্ঘ গবেষণা ও সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে উপকূলে প্লাস্টিক দূষণ কমাতে আমরা এ বিনগুলো স্থাপন করেছি। পর্যটকদের কাছে আকর্ষনীয় করতেই মূলত ব্যতিক্রমী আকৃতি দেওয়া হয়েছে ডাস্টবিনগুলোর। আশা করছি, পর্যটক, স্থানীয় ব্যবসায়ী এবং জেলেরা এই ডাস্টবিনগুলো ব্যবহার করবেন। ফলে আমাদের সমুদ্র দূষণ অনেক কমে আসবে। একই সঙ্গে জীববৈচিত্র্য রক্ষা পাবে।’