কক্সবাজার সদর হাসপাতালের চিকিৎসকরা কাজে ফিরেছেন। রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি প্রত্যাহার করে বিকেল ৩টা থেকে আগের মতো রোগীদের সেবা দিতে শুরু করেছেন তারা।
এর আগে, এক চিকিৎসককে মারধরের প্রতিবাদে কর্মবিরতিতে যান চিকিৎসকরা। জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার অপরাধীদের গ্রেপ্তার ও ডাক্তারদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের আশ্বাস দিলে আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেন তারা। কক্সবাজার সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মং টিং ঞো বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ইন্টার্ন চিকিৎসক মোহাম্মদ তারেক বলেন, ‘হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক, আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার এবং অন্যান্য মেডিক্যাল অফিসারসহ সবার সঙ্গে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের বৈঠক হয়। দীর্ঘ আলোচনা শেষে চিকিৎসক সজীব কাজীর ওপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তার ও চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আশ্বাস দেয় প্রশাসন। আমরা পাঁচ দিনের জন্য আন্দোলন স্থগিত করেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আজ বিকেল ৩টা থেকে আমরা হাসপাতালে আগের মতো সেবা দিয়ে যাচ্ছি। রোগীরা আগের মতো সেবা পাবেন। আহত চিকিৎসক সজীব এখনো চট্টগ্রাম মেডিক্যাল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার অবস্থা ভালো না। আগামী পাঁচ দিনের মধ্যে অপরাধীদের গ্রেপ্তার ও আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হলে আবারও আন্দোলন শুরু হবে।’
কক্সবাজার সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মং টিং ঞো বলেন, জেলা প্রশাসন ও পুলিশ সুপার দুপুরে চিকিৎসকদের সঙ্গে আলোচনায় মিলিত হন। তারা চিকিৎসকদের দাবিগুলো শোনেন। দ্রুত সময়ের মধ্যে দাবি পূরণের আশ্বাস দিলে আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেন চিকিৎসকরা।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বলেন, চিকিৎসককে মারধরের বিষয়টি অত্যন্ত নিন্দনীয়। পুরো ঘটনাটি শুনেছি। আমরা সরকারের উচ্চ পর্যায়ে কথা বলে চিকিৎসকদের দাবি পূরণ হয় এমন পদক্ষেপ নেব। এমন আশ্বাস দেয়ার পর চিকিৎসকরা আন্দোলন প্রত্যাহার করে আগের মতো রোগীদের সেবা দিয়ে যাবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন।
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মুহাম্মদ রহমত উল্লাহ বলেন, ঘটনাটি আমি যোগদানের পর পরই হয়েছে। আমরা মামলার জন্য অপেক্ষা করিনি। হামলাকারী দুই জনকে আটক করেছি। বাকিদের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে চিহ্নিত করে দ্রুত সময়ের মধ্যে আইনের আওতায় আনা হবে।
প্রসঙ্গত, গত সোমবার (৯ সেপ্টম্বর) রাত ১১টার দিকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের সিসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান আজিম নামে এক রোগী। এ ঘটনায় রোগীর স্বজনরা চিকিৎসকের অবহেলায় তার মৃত্যু হয়েছে দাবি করে সিসিইউতে ভাঙচুর চালায়। পরে চিকিৎসক সজীব কাজীকে মারতে মারতে ৪ তলা থেকে নিচে নামিয়ে আনেন। সেখানেও তাকে মারধর করা হয়। চিকিৎসকের ওপর হামলা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে অভিযুক্তদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তারের দাবিতে সেদিন রাত ১টা থেকে জরুরি বিভাগসহ পুরো হাসপাতাল কমপ্লিট শাটডাউন ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।