খাগড়াছড়ির দীঘিনালার ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাঙামাটিতে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে একজন নিহত হয়েছেন। উভয় পক্ষের বেশ কয়েকজন গুরুতর আহত হয়েছেন। এ পরিস্থিতিতে রাঙামাটিতে ১৪৪ ধারা বহাল রেখেছেন জেলা প্রশাসন।
সংঘর্ষের সময় বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর ও দোকানপাটে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাঙামাটি শহরে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। মোতায়েন করা হয়েছে সেনাবাহিনী, বিজিবি ও পুলিশ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকালে পাহাড়ি ছাত্ররা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে রাঙামাটি শহরের বনরূপায় অবস্থান নিয়ে কয়েকটি গাড়ি ও দোকানে হামলা চালায়। খবর পেয়ে বাঙালীরা প্রতিরোধের চেষ্টা করলে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের সময় বেশ কিছু দোকানে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এ সময় আহত হন উভয় পক্ষের বেশ কয়েকজন।
পরে সেনবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেন। শহরের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও বিজিবি’র যৌথ টহল টিম কাজ শুরু করেছে।
এদিকে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাঙামাটিতে ১৪৪ ধারা জারি করেছে রাঙামাটি জেলা প্রশাসন। পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত ১৪৪ ধারা বলবৎ থাকবে বলে জানানো হয়েছে।
রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান গণবিজ্ঞপ্তিতে বলেন, ‘যেহেতু রাঙামাটি পার্বত্য জেলার পৌরসভা এলাকায় আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে এবং জনগণের জান ও মাল ক্ষতিসাধনের আশঙ্কা রয়েছে, সেহেতু রাঙামাটি জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা অদ্য ২০ সেপ্টেম্বর শুক্রবার দুপুর ১টা থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত রাঙামাটি পার্বত্য জেলার পৌরসভা এলাকায় ফৌজদারী কার্যবিধি ১৮৯৮ মোতাবেক ১৪৪ ধারা জারি করা করলাম। এই আদেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
রাঙামাটি সদর হাসপাতালের আরএমও ডা. শওকত আকবর খাঁন বলেন, ‘সংঘর্ষের ঘটনায় মোট ৫৩ জন হাসপাতালে আসেন। তাদের মধ্যে ১৯ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তবে অবস্থা গুরুতর হওয়ায় ৩ জনকে চট্টগ্রাম মেডিক্যালে রেফার করা হয়েছে। ৩৪ জন প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে চলে গেছেন। এছাড়া এ ঘটনায় একজনের মৃত্যু হয়েছে। তবে তার পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।’
রাঙামাটির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘রাঙামাটিতে পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। মাঠে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কাজ করছে। আজকের সংঘর্ষের ঘটনায় একজন নিহত হয়েছেন। তবে তার নাম পরিচয় পাওয়া যায়নি।’
এই বিষয়ে রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান বলেন, ‘সকাল থেকে রাঙামাটি শহরে অনাকাঙ্খিত ঘটনার উদ্ভব ঘটেছে। তাই ১৪৪ ধারা মোতায়েন করা হয়েছে। এই আদেশ পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। এছাড়া রাঙামাটি শহরে সেনাবাহিনী, বিজিবি ও অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’