সারা বাংলা

রাঙামাটিতে সম্প্রীতি সমাবেশ

রাঙামাটিতে জেলা পর্যায়ে বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, গণ্যমান্য ব্যক্তি, সাংবাদিক ও বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে সম্প্রীতি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার (২২ আগস্ট) বিকেলে জেলা প্রশাসনের সম্মেলনকক্ষে এ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান।  

পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়িতে বাইক চুরিকে কেন্দ্র করে পাহাড়ি ও বাঙালিদের মধ্যে সংঘর্ষ, হতাহতের জের পাশের জেলা রাঙামাটিতে ছড়িয়ে পড়ে। শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকালে রাঙামাটি জেলা সদরে ‘সংঘাত ও বৈষম্যবিরোধী পাহাড়ি ছাত্র আন্দোলন’-এর ব্যানারে প্রতিবাদ মিছিল বের করে পাহাড়িরা। মিছিলে ঢিল ছোঁড়াকে কেন্দ্র করে পাহাড়ি ও বাঙালিদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এ সময় আঞ্চলিক পরিষদ কার্যালয়সহ ৩০-৪০টি বাড়িঘর ও দোকানপাটে ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। বিভিন্ন ধরনের অন্তত ৩০টি যানবাহন পুড়িয়ে দেওয়া হয়। সংঘর্ষে একজন নিহত এবং দুইপক্ষের অন্তত ৫৫ জন আহত হয়।

সমাবেশে পাহাড়ি-বাঙালির মধ্যে সংঘর্ষে দোষীদের বিচারের আওতায় নিয়ে আসা, জেলা শহরের গুরুত্বস্থানে সিসি ক্যামরা স্থাপন, সম্প্রীতি রক্ষায় শহরের এলাকাগুলোতে কমিটি গঠন, সম্প্রীতি সমাবেশ, নতুন করে আইনশৃঙ্খলা কমিটি গঠন, ১৪৪ ধারা প্রত্যাহারের বিষয়ে মাইকিং করে সকলকে অবহিত করা, জেলা প্রশাসনের কার্যালয়ের সামনে সভা সমাবেশ নিষিদ্ধ, বনরূপা এলাকায় সেনাক্যাম্প স্থাপনের সিন্ধান্ত নেওয়া হয়।

রাঙামাটি জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দল ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন  

সমাবেশে আরও বলা হয়, হত্যাকাণ্ডের শিকার পরিবারকে ক্ষতিপূরণ, সংঘর্ষে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা করা হবে।

বিকেল ৩টায় শুরু হওয়া এ বৈঠক চলে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত।

সমাবেশে পুলিশ সুপার ড. এস এম ফরহাদ হোসেন, রাঙামাটি সদর জোন কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল এরশাদ হোসেন, সিভিল সার্জন ডা. নূয়েন খীসা, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ সদস্য কে এস মং মারমা, রাঙামাটি জেলা বিএনপির সভাপতি দীপেন তালুকদার দীপু, জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর আব্দুল আলিম, জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাজিব চাকমা, বনরুপা মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব চৌধুরীসহ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

সভায় রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান বলেন, অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে  শহরের পাঁচটি পয়েন্ট বনরুপা, তবলছড়ি, রিজার্ভ বাজার, কলেজগেট এবং ভেদভেদীতে সম্প্রীতি সমাবেশ করা হবে। শহরের বনরুপায় সেনাক্যাম্প করার বিষয়ে সেনাবাহিনীর জোন কমান্ডার গুরুত্ব অনুধাবন করেছেন। এ বিষয়ে তিনি ব্যবস্থা নেবেন। 

জেলা প্রশাসক আরও বলেন, ‘ফেসবুকে যেসব গুজব ছড়ানো হচ্ছে, এটি অপরাধ। আমি পুলিশ সুপারকে অনুরোধ করব, যারা এই গুজব ছড়াচ্ছে, তাদের আইনের আওতায় আনতে।’ 

এর আগে দুপুরে রাঙামাটি শহরে সংঘর্ষে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো পরিদর্শন করেন রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খাঁন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার ড. এস এম ফরহাদ হোসেন, রাঙামাটি সদর জোন কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. এরশাদ হোসেন। 

পরিদর্শনের সময় ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে কথা বলে ক্ষয়ক্ষতির তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল এবং সেই প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে বলে জানান জেলা প্রশাসক।