খুলনার নবাগত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম ছাত্রজীবনে সরাসরি ছাত্রলীগের ক্যাডার ছিলেন- এমন অভিযোগ এনে বক্তারা বলেছেন, ১৯৯৮ সালে থেকে টানা ৪ বছর ছাত্রলীগের সভাপতি বাহাদুর বেপারীর একান্ত সহযোগী ও পোষ্য ক্যাডার হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ত্রাস ছিলেন মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। ২৪তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে মৌলভীবাজারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির শিরোনাম হয়েছিলেন তিনি। শেখ হাসিনা সরকারের গণহত্যাযজ্ঞে দলীয় বিবেচনায় মাঠ প্রশাসন সাজিয়ে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যূত্থান প্রশমনে মাঠপর্যায়ের প্রশাসন বদলি কার্যক্রমে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন এই জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। যখন-যেখানে দায়িত্ব পালন করেছেন; তখন সেখানেই আওয়ামী পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেছেন তিনি। অবিলম্বে খুলনা জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট পদ থেকে তাকে প্রত্যাহার করে গণহত্যায় সহযোগিতা করার অপরাধে শাস্তির জোর দাবি জানিয়েছেন বক্তারা।
সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনের সড়কে খুলনাবাসীর পক্ষে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে এ দাবি জানিয়েছেন সর্বস্তরের নাগরিক নেতারা। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সাইফুল ইসলামকে প্রত্যাহার না করা হলে জেলা প্রশাসক কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি ঘোষণা করেন তারা।
আন্দোলন সমন্বয়ক সাংবাদিক নেতা মো. রাশিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে মাহফুজুর রহমান মফিজের সঞ্চালনায় খুলনার নাগরিক নেতারা, সাংবাদিক, সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও উন্নয়ন কর্মীসহ বিভিন্ন সংস্থার নেতারা বক্তৃতা করেন।
বক্তারা আরও বলেন, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম সরাসরি ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ এর সঙ্গে গভীরভাবে সম্পৃক্ত ছিলেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সহস্রাধিক জীবনের বিনিময়ে গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যূত্থানে বাংলাদেশ দ্বিতীয়বার স্বাধীনতা অর্জন করেছে। বুকের তাজা রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা ছাত্রলীগের চিহিৃত ক্যাডার, ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ এর এজেন্ট, সর্বোপরি একজন দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার হাতে খুলনাকে ছেড়ে দেওয়া যায় না।
তাই অবিলম্বে খুলনা থেকে মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামকে প্রত্যাহার করে বিচার বিভাগীয় তদন্তের মুখোমুখী করে গণহত্যাকারী শেখ হাসিনাকে সহায়তা করার অপরাধে কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়ে অন্তর্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন খুলনাবাসী।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামকে গত ৯ সেপ্টেম্বর এক প্রজ্ঞাপনে খুলনার জেলা প্রশাসকের দায়িত্ব দেয় সরকার। গত ২০ আগস্ট খুলনার সর্বশেষ জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফিনকে প্রত্যাহার করে বদলি করা হয়।