জেলা প্রশাসক (ডিসি) হিসেবে পদায়নে ৩ কোটি টাকার চেক দেওয়ার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন নওগাঁর জেলায় নতুন পদায়ন হওয়া ডিসি আব্দুল আউয়াল। তিনি দাবি করেন, এমন অভিযোগ তোলা একটি মহলের ষড়যন্ত্রের অংশ।
আজ মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সাংবাদিকদের দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি আরও বলেন, মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে ডিসি পদায়ন হয়েছে। কেউ কেউ এটি নিয়ে ষড়যন্ত্র করছেন।
একটি জাতীয় দৈনিকে ‘তিন কোটির ক্যাশ চেক দিয়ে ডিসির পদায়ন!’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। সচিবালয় ও গোয়েন্দা সূত্রের বরাত দিয়ে দৈনিক কালবেলার ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, সম্প্রতি ডিসি নিয়োগের ঘটনায় আলোচনায় আসা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক যুগ্ম সচিবের (এপিডি) কক্ষ থেকে তিন কোটি টাকার একটি চেক উদ্ধার করা হয়। পদায়ন হওয়া এক জেলা প্রশাসকের পক্ষে ওই যুগ্ম সচিবকে চেকটি দেন এক ব্যবসায়ী। তবে কাঙ্ক্ষিত জেলায় পদায়ন না হওয়ায় চেকের বিপরীতে টাকা জমা দেননি ডিসি। অন্যদিকে সব কিছু ফাঁস হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন চেকদাতা ওই ব্যবসায়ী। বিষয়টি নিয়ে সরকারের একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা তদন্ত করছে।
পত্রিকার প্রতিবেদনে চেকদাতা মির্জা সবেদ আলীর বরাতে নওগাঁয় পদায়ন হওয়া জেলা প্রশাসক আব্দুল আউয়ালের নাম উঠে আসে।
জেলা প্রশাসক আব্দুল আউয়াল বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের কর্মকাণ্ড পরিচালানা করতে গিয়ে মানসিক চাপে রাখতে অসৎ উদ্দেশ্যে ডিসিদের বিরুদ্ধে প্রোপাগান্ডা ছড়ানো হচ্ছে। কন্টাক্ট করে পদায়ন নেওয়ার রেওয়াজে নেই। সংস্কৃতিতে নেই। পক্ষপাতিত্বের ঊর্ধ্বে থেকে যারা কাজ করেছেন, তাদের এবার ডিসি হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
আব্দুল আউয়াল দুর্নীতি দমন কমিশনের পরিচালক ছিলেন। সম্প্রতি জেলা প্রশাসক হিসেবে নওগাঁয় যোগদান করেছেন। আব্দুল আউয়াল বলেন, ‘তিন কোটি টাকার চেক দিয়ে পদায়নের খবরে যে সকল ব্যক্তির নাম এসেছে, তাঁদের সঙ্গে আমার কোনোদিন দেখা হয়নি কিংবা দেখিওনি। তাঁদের নামও প্রথম শুনলাম। সেখানে এপিডি অনুবিভাগের যুগ্ম সচিব ড. জিয়া উদ্দিন স্যারের কথা বলা হয়েছে। অথচ জিয়া উদ্দিন স্যার আমাদের সিনিয়র অফিসার। উনার কবে পদায়ন হয়েছে সেটিও আমি জানি না। স্যারকে ফিজিক্যালি কোনো দিন দেখিওনি।’ তিনি আরও বলেন, ‘জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সততা, মেধা এবং দক্ষতা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে অতীতের সুনাম দেখে দীর্ঘ ভাইবার মাধ্যমে এবার জেলা প্রশাসক নিয়োগ দিয়েছে। সকল ধরনের পক্ষপাতিত্বের ঊর্ধ্বে থেকে যারা কাজ করেছেন, তাদের ডিসি হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে। সেক্ষেত্রে আমি নওগাঁ জেলায় নিয়োগ পেয়েছি। এবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় যে উদ্যোগ নিয়েছে, এ উদ্যোগ স্বাগত জানাই।’
এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘এ সব কেন করা হচ্ছে, এটি আসলে বোঝা খুব মুশকিল। আমরা ৫১টি জেলায় জেলা প্রশাসক হিসেবে দীর্ঘ পরীক্ষার মাধ্যমে পদায়িত হয়েছি। আমার মনে হয়, বর্তমান সরকারের কর্মকাণ্ড পরিচালিত করতে গিয়ে মানসিক চাপে রাখার জন্য এবং সরকারের কাজগুলো যেন সঠিকভাবে করতে না পারি, সেই অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে এসব প্রোপাগান্ডা ছাড়ানো হচ্ছে।’
আব্দুল আউয়াল বলেন, ‘আমি আশা করি, গণমাধ্যমে যে খবর এসেছে; এ বিষয়ে জনপ্রশসন মন্ত্রণালয় কিংবা বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে তদন্ত করা হবে। তদন্ত করে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন করবে।’