রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে সাতজন বালিয়াকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।
শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে বালিয়াকান্দি চৌরঙ্গী মোড়ে দুই গ্রুপের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া ব্যক্তিরা হলেন- বালিয়াকান্দি উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক খোন্দকার মশিউল আজম চুন্নু, ইলিশকোল গ্রামের কালাম শেখের ছেলে আলম শেখ, একই গ্রামের হাসেম ভুঁইয়ার ছেলে জাহিদুল ভুঁইয়া, বালিয়াকান্দি গ্রামের মৃত ইদ্রিস মোল্যার ছেলে রুবেল মোল্লা, সাঈদ শিকদারের ছেলে আরিফ শিকদার, আমতলার কালু মিয়ার ছেলে লিটন মিয়া, পথচারী বালিয়াকান্দি গ্রামের বাদশা মোল্লার ছেলে ফিটু মোল্লা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বালিয়াকান্দি উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক গোলাম সরোয়ার ভুঁইয়াকে সাবেক সাধারণ সম্পাদক খোন্দকার মশিউল আজম চুন্নুর ছেলেসহ তার লোকজন লাঞ্ছিত করেন। বিষয়টি জানাজানি হলে উভয়পক্ষের লোকজনের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। পরে রাত সাড়ে ৮টার দিকে বালিয়াকান্দি শহরের চৌরঙ্গী মোড়ে দুই গ্রুপ মুখোমুখি সংঘর্ষে জড়িয়ে পরে।
সংঘর্ষের সংবাদ পেয়ে ক্যাপ্টেন মো. এনামুল হাসানের নেতৃত্বে সেনাবাহিনীর একটি দল ও বালিয়াকান্দি থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এসময় উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক খোন্দকার মশিউল আলম চুন্নুসহ (৫৫) বিএনপির তিন কর্মীকে আটক করা হয়।
যৌথ বাহিনী সূত্র জানায়, মশিউল আলম চুন্নু সংঘর্ষে আহত হয়ে বালিয়াকান্দি হাসপাতালে গেলে তাকে কর্তব্যরত চিকিৎসক হাসপাতালে ভর্তি হতে বলেন। কিন্তু তিনি গ্রেপ্তার এড়াতে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে হাসপাতাল ত্যাগ করে নিজ বাড়ির পাশের একটি বাড়িতে গিয়ে আত্মগোপন করে। খবর পেয়ে সেখানে অভিযান চালিয়ে যৌথ বাহিনী তাকে আটক করে। এ সময় তিনি নিজেকে ভিন্ন নামে পরিচয় দেয়। কিন্তু যৌথ বাহিনী তার পরিচয় নিশ্চিত হয়ে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যায়। সংঘর্ষের ঘটনার পর এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে যৌথ বাহিনী টহল ও সংঘর্ষের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারের অভিযান চলমান রয়েছে।
বালিয়াকান্দি উপজেলা বিএনপির সভাপতি গোলাম শওকত সিরাজ বলেন, সংঘর্ষের পর চুন্নুর নেতৃত্বে আমার বাসভবনে আগুন লাগানোর চেষ্টা করা হয়।
বালিয়াকান্দি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জামাল উদ্দিন বলেন, এ ঘটনায় বালিয়াকান্দি উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক গোলাম সরোয়ার ভূঁইয়া বাদী হয়ে খোন্দকার মশিউল আজম চুন্নুসহ ১৫ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা ৭০-৮০ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। গ্রেপ্তার মশিউল আজম চুন্নু এবং তার দুই সহযোগী রুবেল হোসেন ও কামরুজ্জামানকে আদালতে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।