দখল ও দূষণে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে পটুয়াখালী জেলার দুমকি উপজেলার পীরতলা খাল। সেখান থেকে ভেসে আসা আবর্জনা ও পঁচা পানির দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ পথচারীসহ স্থানীয় বাসিন্দারা। দ্রুত সময়ের মধ্যে দখলমুক্ত করে খালটির প্রাণ ফেরাতে উদ্যোগ নিতে প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
জানা গেছে, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ব গেট সংলগ্ন পীরতলা বাজারের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে পীরতলা খাল। এই খালটি লোহালিয়া নদীর গাবতলী থেকে আঙ্গারিয়া ইউনিয়নের পায়রা নদীতে মিলেছে। বছর ২০ আগেও এই খালে চলাচল করতো নৌকা ও ট্রলার।
শুকনো মৌসুমে খেতে সেচের ব্যবস্থা করা হতো এই খালের পানি দিয়ে। বর্তমানে পীরতলা বাজারের ময়লা-আবর্জনা ফেলায় খালটি ভরাট হয়ে গেছে। পঁচা দুর্গন্ধে স্কুল ও কলেজগামী শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি অতিষ্ঠ বাসিন্দারা। এছাড়া, খালটির দুইপাশ দখল করে অনেকে নির্মাণ করেছেন বহুতল ভবনসহ বিভিন্ন পণ্যের দোকান। যা খালটিকে আরো সংকীর্ণ করে তুলেছে।
দুমকির মুরাদিয়া এলাকার বাসিন্দা জিএম ইউসুফ বলেন, ‘এক সময়ে এই খালে আমরা গোসল করতাম। দৈনন্দিন কাজ সারতাম। এখন খালটি একেবারে ভরাট হয়ে গেছে।’
এই এলাকার অপর বাসিন্দা সফিক মৃধা বলেন, ‘এই খালটি অনেকেই দখল করে নিয়েছেন। যে কারণে অস্তিত্ব সংকট দেখা দিয়েছে খালটির। দ্রুত দখল ও দূষণ মুক্ত করে খালটির প্রাণ বঁচাতে প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’
সৃজনী বিদ্যানিকেতন উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী ইয়াসমিন আরা বলেন, ‘খাল থেকে ভেসে আসা দুর্গন্ধের কারণে আমরা বিদ্যালয়ে যেতে আসতে অনেক সমস্যা হয়। মূলত বাজারের সব ময়লা আবর্জনা এই খালেই ফেলা হয়।’
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. নুরুল আমিন বলেন, ‘খাল নষ্ট হয়ে গেলে ভূগর্ভস্থ পানি নিচের দিকে নেমে যায়। এছাড়া দূষিত পানির কারণে জীব বৈচিত্র্যের ব্যাপক ক্ষতি হয়।’
দুমকি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহীন মামদুম বলেন, ‘এই খালটি যারা দখল করেছেন তাদের তালিকা ইতোমধ্যে তৈরি করা হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ পেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া, দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিডি ক্লিনের সহায়তায় খালটি পরিচ্ছন্ন করা হবে। খাল খননের জন্য আমরা পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অবহিত করবো।’