মহাসিন আলী, মেহেরপুর : জিন বাবার অপারেশন বলে কথা। জিন বাবা অপারেশন করে ভালো করেন কঠিন কঠিন রোগ। আর ছোটখাটো রোগ সেরে যায় ফুঁতেই। এমন প্রচারে গাংনীর নারী কবিরাজ রহিমার ব্যবসা এখন জমজমাট।কবিরাজ রহিমার আস্তানায় জিনের পরামর্শে গাছগাছড়া ও ঝাড়-ফুঁক চিকিৎসা দেওয়া হয়। শত শত জিন রয়েছে তার বশে। কথিত কবিরাজ রহিমা ও তার দালালদের মুখে এমন ক্ষমতার কথা শুনে চিকিৎসা নিতে আসেন অনেকে। সপ্তাহের শনিবার ও মঙ্গলবার রহিমার রোগী দেখার দিন। রিকশা, ভ্যান, নছিমন-করিমন ও ইজিবাইকসহ বিভিন্ন যানযোগে ওই দুই দিনে শত শত রোগী আসেন রহিমার বাড়িতে। এদের মধ্যে নারী রোগীর সংখ্যাই বেশি।রহিমার পুরো নাম রহিমা খাতুন। স্বামী শহিদুল ইসলাম দিনমজুর। গাংনী উপজেলার ধানখোলা ইউনিয়নের জুগিন্দা গ্রামের স্কুলপাড়ায় রহিমার বাড়ি। এখানেই চিকিৎসা দেন রহিমা। প্রায় তিন বছর ধরে কবিরাজি চিকিৎসা দিচ্ছেন। জিনের দ্বারা অপারেশনের অপপ্রচারে তার প্রতারণার ফাঁদে পড়ে নিঃস্ব হতে চলেছেন এলাকা ও দূরদূরান্ত থেকে ছুটে আসা অনেকেই। গাংনী শহরের তোফায়েল আহম্মেদ জানান, তার শাশুড়ি দুরারোগ্য ব্যাধি ক্যানসারে আক্রান্ত। তার রোগমুক্তির জন্য কবিরাজ রহিমার সঙ্গে সাত হাজার টাকার চুক্তি করেন তিনি। চার হাজার টাকা পরিশোধ করা হয়। কোনো উপকার না হওয়ায় টাকা ফেরত চান তারা। ক্ষিপ্ত হয়ে রহিমা জিনের ভয় দেখান। শেষে কিছু টাকা ফেরত দেন। তোফায়েল জানান, অনেক পরিবারই রহিমা খাতুনের অপচিকিৎসায় প্রতারিত হচ্ছেন। তারপরও জিনের অপারেশনে চিকিৎসা হচ্ছে গুজবে অনেকেই ছুটে যাচ্ছেন রহিমার বাড়িতে। রহিমার বাড়িতে গেলে দেখতে পাওয়া যায় একটি খড়ের খুপরি ঘর। এখানেই তিনি জিনের সহায়তায় চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। ওই ঘরে রাখা হয়েছে কিছু গাছগাছড়াও। কয়েকজন দালাল জানান, রহিমার কাছে থাকা জিন বাবা সব রোগের অপারেশন করে ভালো করেন।
জানতে চাইলে প্রতারণার বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে রহিমা জানান, রোগীদের চাপেই তিনি চিকিৎসা দিচ্ছেন। অনেকেই ভালো হয়ে তাকে অর্থ দেন। তিনি প্রতারণা করছেন না। কিছু মানুষ তার পিছু নিয়েছে। তার নামে বদনাম রটানো হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, কবিরাজি করে তাদের অবস্থা এখন ‘আঙুল ফুলে কলাগাছ’। কবিরাজির অর্থ দিয়ে একতলা বাড়ি নির্মাণের পাশাপাশি জমিও কিনেছেন। গ্রামের মধ্যে তিনি এখন ধনী ব্যক্তি।
রাইজিংবিডি/ ঢাকা/১৬ জুলাই ২০১৪/টিপু/এএ