সিরাজগঞ্জ-২ (সদর-কামারখন্দ) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য জান্নাত আরা হেনরি ও তার স্বামী সাবেক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শামীম তালুকদার লাবুর সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে সিরাজগঞ্জ জেলা যুবদলের সহ-সভাপতি সোহানুর রহমান রঞ্জু নিহত হওয়ার ঘটনায় বুধবার (২ অক্টোবর) বিকেলে সদর থানা পুলিশ হেনরি ও তার স্বামীকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠায়। এসময় পুলিশের পক্ষ থেকে আসামিদের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-২ (সদর আমলী আদালত) বিচারক মো. রাসেল মাহমুদ শুনানি শেষে দুজনের সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। পরে আসামিদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক।
আরও পড়ুন: মৌলভীবাজার থেকে সাবেক এমপি হেনরি স্বামীসহ আটক
বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট রফিক সরকার ও সিরাজগঞ্জ আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাসুদুর রহমান এতথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মাসুদুর রহমান বলেন, তাদের (হেনরি ও লাবু) নামে তিনটি হত্যা ও একটি অস্ত্র আইনে মামলা রয়েছে। তিনটিতেই তারা এজাহার নামীয় আসামি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত জেলা যুবদলের সহ-সভাপতি সোহানুর রহমান রঞ্জু হত্যা মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করে পুলিশ। এই মামলায় জান্নাত আরা হেনরি ৭ নম্বর ও তার স্বামী শামীম তালুকদার লাবু ৯ নম্বর আসামি।
তিনি আরও বলেন, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। আসামিপক্ষের আইনজীবীরা রিমান্ড আবেদনের বিরোধিতা করেন। আমরা বাদীপক্ষের আইনজীবীরা রিমান্ডের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করি। পরে বিজ্ঞ আদালত আসামিদের সাতদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন এবং তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
প্রসঙ্গত, গত ৪ আগস্ট জেলা যুবদলের সহ-সভাপতি সোহানুর রহমান রঞ্জু, ছাত্রদলের সদস্য মো. সুমন ও যুবদলের কর্মী আব্দুল লতিফ গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। এ ঘটনায় গত ২২ আগস্ট রাতে নিহত রঞ্জুর স্ত্রী পৌরসভার মাছুমপুর মহল্লার মৌসুমী খাতুন, ছাত্রদলের কর্মী নিহত সুমনের বাবা শহরের গয়লা মহল্লার গঞ্জের আলী এবং একই মহল্লার নিহত যুবদল কর্মী আব্দুল লতিফের বোন মোছা. সালেহা খাতুন বাদী হয়ে সাবেক সংসদ সদস্য জান্নাত আরা হেনরি ও তার স্বামী জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শামীম তালুকদার লাবুসহ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের আসামি করে তিনটি হত্যা মামলা করেন।
এই তিনটি হত্যা মামলা ছাড়াও সরকারি নির্দেশ মোতাবেক লাইসেন্সকৃত অস্ত্র ও গুলি জমা না দিয়ে নিজ দখলে রাখা এবং পরে সেই অস্ত্র ও গুলি সদর উপজেলার একটি নির্মাণাধীন মসজিদের সিঁড়ির নিচ থেকে উদ্ধারের ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনেও মামলা হয়। এই চারটি মামলার এজাহারভুক্ত আসামি তারা।
এর আগে, মৌলভীবাজার জেলার বর্ষীজোড়া গ্রাম থেকে হেনরি ও তার স্বামীকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। পরে তাদেরকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। আজ বিশেষ নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে তাদের আদালতে আনা হয়।