জনপ্রিয় নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। নির্মাণ ক্যারিয়ারে বেশ কিছু দর্শকপ্রিয় নাটক-চলচ্চিত্র উপহার দিয়েছেন। পলিট্রিক্যাল গল্প নিয়ে নির্মাণ করেছেন ‘৪২০’-এর মতো দীর্ঘ ধারাবাহিক। কাজের বাইরেও সমসাময়িক নানা বিষয় নিয়েও কথা বলতে দেখা যায় তাকে। নিজের এসব ভাবনা প্রকাশের জন্য বেছে নেন সোশ্যাল মিডিয়া।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের শুরু থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় সক্রিয় ছিলেন ফারুকী। গণঅভ্যত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরও সেই ধারাবাহিকতা অব্যহত রেখেছেন। চলমান নানা ইস্যু নিয়ে নিয়মিত নিজের মতামত ও পরামর্শ দিচ্ছেন।
বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) সকালে নিজের ফেসবুকে দীর্ঘ একটি পোস্ট দিয়েছেন ফারুকী। লেখার শুরুতে কটাক্ষের সুরে এই পরিচালক বলেন, ‘আমাকে উপদেষ্টা করা এখন সময়ের দাবি। আওয়ামী প্রোপাগান্ডু লীগ যেভাবে আমার ব্যাপারে তাদের ক্ষোভ জানাচ্ছে, তাতে বোঝা যাচ্ছে ফ্যাসিবাদের পতনে আমার বিশাল ভূমিকা আছে। সুতরাং ‘ফ্যাসিবাদের পুচ্ছে আগুন’ কোটায় আমাকে উপদেষ্টা করার জন্য প্রধান উপদেষ্টার প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’
আওয়ামী প্রোপাগান্ডু লীগের উদ্দেশ্যে মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, ‘ওদের বুদ্ধি যদিও খুলবে না, তবু একটু বলি। এক. ওহে, আমি কোনো রাজনৈতিক কর্মী না। আমি আওয়ামী লীগ-বিএনপি সবারই ভালো কিছুর প্রশংসা এবং খারাপ কাজের নিন্দা করতে পারি।’
শেখ হাসিনা সরকারের শাসনামলে কৌতুকময় জীবন কাটিয়েছেন মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। তার বর্ণনা দিয়ে এ নির্মাতা বলেন, ‘ফ্যাসিবাদেরকালে যেহেতু এই দেশেই থাকতে হইছে, ফলে আমাদের বেঁচে থাকা ছিল বড় কৌতুকময়। নানা কায়দা-কানুন করে বেঁচে থাকতে হইতো। সরকারের সমালোচনা করে একটা পোস্ট দিলে তিনটা দিতে হইতো প্রশংসা করে। আবার সমালোচনারও কিছু প্যাটার্ন আছে। প্রধানমন্ত্রীকে বাইরে রেখে অন্যদের সমালোচনা করতে হইতো। তারপর ধরেন, আপনার সিনেমা আটকে যাবে যেটা আটকানোই অন্যায়। সেই সিনেমা ছাড়ানোর জন্য তদবির করবেন এবং ছাড়ানোর পর ধন্যবাদ দিবেন। নানাবিধ কৌতুকময় ছিল এই জীবন। সামনে আমার কাজে এইসবের ছাপ দেখবেন অল্প বিস্তর।’
পরামর্শ দিয়ে মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, ‘ওরাও জানে ওদের লুটপাট, টেন্ডার বাণিজ্য, চুরিচামারি, ব্যবসা কোনো কিছুর সাথেই আমাদের কোনো সম্পর্ক নাই। কিন্তু আমাদের উপর রাগ আছে। কেন আমরা ফ্যাসিস্ট পতনের আন্দোলনে নামলাম- এই ক্ষোভ বড় গভীর। এই ক্ষোভ ঢালার জন্য এখন ওদের কষ্ট করে আমার টাইমলাইনের উপর পিএইচডি করতে হচ্ছে। কিন্তু ওদের নিজেদের জন্য ভালো হবে এইসবে সময় ব্যয় না করে, আত্মশুদ্ধির পথে হাঁটা। আর বাংলাদেশের করণীয় হচ্ছে মানবতা বিরোধী অপরাধ আর সীমাহীন লুটপাটের বিচার করা।’