ফিলিস্তিন, লেবানন ও ইয়েমেনে ইসরায়েলের নৃশংসতা রুখে দিতে মুসলিম দেশগুলোকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রিন্সিপাল মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানী।
তিনি বলেছেন, লেবাননে হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরুল্লাহকে হত্যা করার পর এবার দেশটিতে স্থল অভিযান শুরু করে মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে ইসরায়েল। ফিলিস্তিন ধ্বংসের পর লেবাননে বিশ্বসন্ত্রাসী ইসরায়েল বর্বরোচিত হামলা চালিয়ে পুনরায় হত্যাযজ্ঞে মেতে উঠেছে। মুসলিম দেশ ইয়েমেনেও বিমান হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে আধুনিক অস্ত্র দিয়ে মুসলিম হত্যাযজ্ঞে প্রকাশ্যে সহযোগিতা করছে। এর দ্বারা প্রমাণ করেছে, ইঙ্গ-মার্কিনিদের অপপরাষ্ট্রনীতির অবৈধ সন্তান ইসরায়েলকে দিয়ে পৃথিবীতে অশান্তির আগুন জ্বালিয়ে রেখেছে মার্কিন গোষ্ঠী। ইসরায়েলের বিষদাঁত ভেঙে দিতে মুসলিম বিশ্বকে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ গড়ে তোলা ছাড়া বিকল্প কোনো পথ নেই।
শুক্রবার (৪ অক্টোবর) বিকেলে ইসলামী আন্দোলনের ঢাকা মহানগর শাখার উদ্যোগে বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। লেবাননে ইসরায়েলি হামলা বন্ধ, ভারতে ইসলাম ধর্ম ও রাসুলকে (সা.) নিয়ে রামগিরি মহারাজের কটূক্তি এবং তাতে বিজেপি নেতা নিতেশ রানের সমর্থনের প্রতিবাদে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানী বলেছেন, বলেছেন, ভারত সব সময় মুসলিম উম্মাহর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে থাকে। ভারতের পুরোহিত রাজগিরি মহারাজ হজরত মুহাম্মদকে (সা) নিয়ে কটূক্তি করে বিশ্বের মুসলমানদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ সৃষ্টি করেছে। পুরোহিতকে গ্রেপ্তার করে কঠোর শাস্তি এবং ক্ষমা না চাওয়া পর্যন্ত মুসলিম উম্মাহর প্রতিবাদের আগুন নিভবে না।
তিনি বলেন, ভারতের কসাই মোদি হাসিনাকে সাপোর্ট দিয়ে দেশবিরোধী অনেক চুক্তি করিয়ে নিয়েছে। বিনিময়ে ভারত আমাদেরকে সীমান্তে হত্যা এবং বর্ষা মৌসুমে বাঁধ ছেড়ে দিয়ে পানিতে তলিয়ে মারে। কাজেই ভারতের সাথে করা সকল চুক্তি বাতিল করতে হবে। হজরত মুহাম্মদ (সা.)কে নিয়ে কটূক্তির বিষয়ে ভারতের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে প্রতিবাদ করতে হবে।
ইসলামী আন্দোলনের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলমের সভাপতিত্বে সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ। বক্তব্য রাখেন—মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম, মাওলানা আরিফুল ইসলাম, ডা. শহিদুল ইসলাম, নুরুজ্জামান সরকার, মুহাম্মদ হাসমত আলী, মুফতি ফরিদুল ইসলাম এবং অধ্যাপক ফজলুল হক মৃধা।
সমাবেশের পর একটি বিশাল বিক্ষোভ মিছিল বায়তুল মোকাররম উত্তর গেট থেকে বের হয়ে পল্টন মোড়ে পৌঁছালে পুলিশ মিছিলে বাধা দিতে কাঁটাতারের বেরিকেড দেয়। মিছিলটি অন্যদিকে ঘুরে দৈনিক বাংলায় গিয়ে শেষ হয়।
সমাবেশে ইমতিয়াজ আলম বলেন, জাতিসংঘ এবং ওআইসিকে মুসলিম দেশগুলোতে ইসরায়েলি হত্যাযজ্ঞ বন্ধে জরুরিভাবে উদ্যোগ নিতে হবে। সন্ত্রাসী ইসরায়েল লেবাননে ও ইয়েমেনে বিমান হামলা চালিয়ে নির্বিচারে মুসলিম নারী-পুরুষ ও শিশুদের হত্যা করছে। এভাবে বার বার মানবাধিকার লঙ্ঘন করে ইসলাম ও মানবতার দুশমন হিংস্র হায়েনা ইসলায়েলি গোষ্ঠী হত্যাযজ্ঞ চালিয়েই যাচ্ছে। মুসলিম হত্যাযজ্ঞ বন্ধ করা না হলে পৃথিবীর মানচিত্র থেকে ইসরায়েলের নাম-নিশানা মুছে ফেলা হবে।
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সংলাপ অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে তৃতীয় দফায় সংলাপে বসছে রাজনৈতিক দলগুলো। এরই ধারাবাহিকতায় শনিবার (৫ অক্টোবর) বিকেল ৫টায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সংলাপে বসবে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রতিনিধিদল। প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন দলটির আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম।