টাঙ্গাইল শহরের বেশিরভাগ খাল অবৈধ দখল ও পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা ভালো না থাকায় অল্প বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। এতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে পৌরবাসীকে। দুর্ভোগ লাঘবে ইতিপূর্বে মেয়রকে অবগত করা হলে প্রতিশ্রুতি মিললেও দীর্ঘদিনেও কোনো সুরাহা হয়নি। ফলে বছরের পর বছর ধরে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে স্থানীয়দের।
বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির কর্মকর্তা বলছে, ড্রেনের অব্যবস্থাপনার পাশাপাশি অবৈধভাবে খাল দখল ও শহরের পুকুর ভরাটের কারণে এ দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। পৌরসভার প্রশাসক জানিয়েছে, জনদুর্ভোগ লাঘবে পরিকল্পনা করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, টাঙ্গাইল শহরের সাবালিয়া, বিশ্বাস বেতকা, পূর্ব আদালতপাড়া, থানা পাড়া, আদি টাঙ্গাইলসহ শহরের বিভিন্ন এলাকায় অল্প বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। অনেকের বাসা বাড়িতে পানি জমে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
শহরের সাবালিয়া এলাকার স্কুল ছাত্র মেরাজ উদ্দিন বলেন, অল্প বৃষ্টিতে পাকা সড়ক তলিয়ে আমার বাসায় পানি প্রবেশ করেছে। এতে আমাদের অনেক কষ্ট হচ্ছে।
নাসিমা বেগম নামের এক গৃহবধূ বলেন, আমাদের এলাকার খালটি প্রায় পাঁচ বছর ধরে একেবারেই বন্ধ হয়ে আছে। এতে একটু বৃষ্টি হলেই বাসায় পানিবন্দি হই। রান্না বন্ধ হয়ে যাওয়া গতকাল সারাদিনে একবার খেয়েছি। খাল অবৈধ দখল মুক্তের পাশাপাশি ড্রেনেজ ব্যবস্থা আরও ভাল করার দাবি জানাচ্ছি।
স্থানীয় রাসেল মিয়া বলেন, আমাদের বাসায় দুই দিন ধরে পানিবন্দি রয়েছে। আজ শনিবার সকালে মোটর ভাড়া করে পানি ফেলেছি। যদি আবার বৃষ্টি হয় তাহলে আবারও পানিবন্দি হতে হবে।
রিকশাচালক সেকান্দার আলী বলেন, বৃষ্টি হওয়ার পর টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের দক্ষিণ পাশে ও সাবালিয়া এলাকায় যাওয়া যায় না। অল্প বৃষ্টিতে সড়ক তলিয়ে থাকে। রিকশার মোটরে পানি প্রবেশ করে অনেক সময় নষ্ট হয়ে যায়।
জানা যায়, ১৮৮৭ সালের ১ জুলাই টাঙ্গাইল পৌরসভা স্থাপিত হয়। ১৯৮৫ সালে টাঙ্গাইল পৌরসভা ‘গ’ থেকে ‘খ’ এবং ১৯৮৯ সালে ‘খ’ থেকে ‘ক’ শ্রেণীতে উন্নতি লাভ করে। তারপরও দীর্ঘ প্রায় ৩৫ বছরেও দুর্ভোগ কমেনি পৌরবাসীর।
বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) বিভাগীয় সমন্বয়কারী গৌতম চন্দ্র বলেন, শহরের ২৭টি খালের মধ্যে প্রায় সব খাল অবৈধভাবে দখল হয়ে রয়েছে। এছাড়াও শহরের পুকুরগুলো প্রভাব খাটিয়ে ভরাট করা ও ড্রেনেজ ব্যবস্থা পর্যাপ্ত না থাকায় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। দুর্ভোগ লাঘবে খাল দখল মুক্তের পাশাপাশি ড্রেনেজ ব্যবস্থা সচল করা জরুরি। তাহলেই টাঙ্গাইল শহরবাসীর দুর্ভোগ অনেকটা লাঘব হবে।
টাঙ্গাইল পৌরসভার প্রশাসক মো. শিহাব রায়হান বলেন, বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে জন দুর্ভোগ লাঘবে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।