নেত্রকোণার জারিয়া-জাঞ্জাইল পয়েন্টে গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়েছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। অতি ভারী বৃষ্টি ও উজানের ঢলে জেলার দুর্গাপুরের তিনটি ইউনিয়নের অন্তত ১৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ফলে পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছেন ২০ হাজার মানুষ।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সারোয়ার জাহান, শনিবার (৫ অক্টোবর) জারিয়া-জাঞ্জাইল পয়েন্টে ২৫০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এটি ছিল দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত। জেলার দুর্গাপুরে ১৮৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।
এদিকে, বৃষ্টি আর উজানের ঢলের কারণে জেলার প্রধান সবকটি নদ-নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। সোমেশ্বরী নদীর দুর্গাপুর পয়েন্টে গতকাল শুক্রবার বিকেল ৬টা থেকে আজ শনিবার বিকাল ৩টা পর্যন্ত ২১ ঘণ্টায় ২ দশমিক ৫ সেন্টিমিটার পানি বেড়েছে। বর্তমানে নদীটির পানি বিপৎসীমার শূন্য দশমমিক ৭৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নদীটিতে ঘণ্টায় গড়ে প্রায় ১০ সেন্টিমিটার পানি বেড়েছে। উপদাখালী নদীর পানি কলমাকান্দা পয়েন্টে একই সময়ে বেড়েছে ৬১ সেন্টিমিটার। সেখানে পানি বিপৎসীমার শূন্য দশমিক ৩৪ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কংশ নদের পানিও বন্যার শঙ্কা জাগিয়ে বেড়েছে সমানতালে। এই নদের পানি জারিয়া-জাঞ্জাইল পয়েন্টে শনিবার বিকেল ৩টা নাগাদ ১ দশমিক ৩৩ সেন্টিমিটার বেড়েছে। বর্তমানে বিপৎসীমার শূন্য দশমিক ৫৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে এই নদের পানি।
হাওরের মাঝ দিয়ে বয়ে চলা ধনু নদের পানি সামান্য বেড়েছে। খালিয়াজুরী পয়েন্টে এই নদের পানি একই সময়ে বেড়েছে ৫ সেন্টিমিটার। সেখানে পানি বিপৎসীমার ২ দশমিক শূন্য ৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে বইছে।
দুর্গাপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, বৃষ্টি ও উজানের ঢলের পানিতে দুর্গাপুর উপজেলার কুল্লাগড়া, গাওকান্দিয়া ও কাকৈরগড়া ইউনিয়নের ১৫টি গ্রামের লোকালয়ে পানি ঢুকেছে। প্রায় ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।
দুর্গাপুর সাংবাদিক সমিতির সভাপতি দিলোয়ার হোসেন তালুকদার বলেন, দুর্গত এলাকায় বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে।
এদিকে, আজ বিকেলে দুর্গাপুরে পানিবন্দি এলাকা পরিদর্শনে যান জেলা প্রশাসক বনানী বিশ্বাসসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা। জেলা প্রশাসক কাকৈরগড়া ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম পরিদর্শন করেন। পরে তিনি ইউনিয়নটির রামবাড়ি গ্রামে শতাধিক মানুষের মধ্যে শুকনো খাবার, চাল, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট বিতরণ করেন।
জেলা প্রশাসক বনানী বিশ্বাস বলেন, প্লাবিত এলাকার দুর্ভোগে মধ্যে থাকা মানুষের পাশে প্রশাসন আছে। তাদের খাদ্য সরবরাহ থেকে সব ধরণের সহায়তা দিতে শুরু করেছে প্রশাসন।