এ বছর বান্দরবানে ৭টি উপজেলায় ৩১টি সর্বজনীন পূজামণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। আগামী ৯ অক্টোবর শুরু হবে দুর্গাপূজা। মণ্ডপগুলোতে চলছে প্রতিমা তৈরি ও শেষ সময়ের সাজসজ্জা।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, দুষ্টের দমন আর শিষ্টের পালনের জন্যই স্বর্গ থেকে মর্ত্যলোকে দেবী দুর্গার আগমন ঘটে। এরই ধারাবাহিকতায় সনাতন ধর্মাবলম্বীরা প্রতিবছর শারদীয় উৎসব হিসেবে দুর্গাপূজা উদযাপন করে আসছে।
দুর্গাপূজার প্রধান অনুষঙ্গ দেবী দুর্গার প্রতিমা। উৎসব সামনে রেখে প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন মৃৎশিল্পীরা। শিল্পীদের হাতের ছোঁয়ায় মাটির প্রতিমা হয়ে উঠছে অপরূপ। একই সঙ্গে দুর্গোৎসবকে পরিপূর্ণ করতে দিনরাত মন্দিরগুলোতে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি।
এবারের দুর্গাপূজা ৯ অক্টোবর ষষ্ঠীপূজা দিয়ে শুরু হবে। ১০ অক্টোবর সপ্তমী, ১১ অক্টোবর অষ্টমী, ১২ অক্টোবর নবমী, ১৩ অক্টোবর বিজয়া দশমীর মধ্যে দিয়ে পাঁচ দিনব্যাপী হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজার পরিসমাপ্তি ঘটবে।
বান্দরবান কয়েকটি মণ্ডপ ঘুরে দেখা গেছে, কাদামাটি, বাঁশ, খড়, সুতলি দিয়ে শৈল্পিক ছোঁয়ায় গড়ে তোলা হয়েছে দেবী দুর্গার প্রতিমা। দম ফেলার সময় নেই কারিগরদের। সুনিপুণ হাতে মাটি ও রংতুলির ছোঁয়ায় দেবীকে রাঙিয়ে তুলতে ব্যস্ত শিল্পীরা। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কাজ করছেন তারা। নিপুণ হাতের ছোঁয়ায় তৈরি হচ্ছে দেবী দুর্গা, লক্ষ্মী সরস্বতী, কার্তিক, অসুরসহ বিভিন্ন দেব-দেবীর মূর্তি।
শিল্পীরা জানান, প্রতিবছরই তারা অধীর আগ্রহে দেবী দুর্গার প্রতিমা তৈরির কাজের অপেক্ষায় থাকেন। শুধু জীবিকার জন্যই নয়, দেবী দুর্গার প্রতিমা তৈরির সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে তাদের ধর্মীয় অনুভূতি, ভক্তি আর ভালোবাসা।
প্রতিমা তৈরির কারিগর তারক নাথ বলেন, ‘এখনই বছরের সবচেয়ে বেশি ব্যস্ত সময় পার করছি। পূজা শুরুর আর মাত্র কয়েকটা দিন বাকি। দম ফেলার সময় নেই। এর মধ্যেই দেবী দুর্গার প্রতিমা তৈরির প্রায় কাজ শেষ হয়েছে। যত কষ্টই করি না কেন, যখন দেবীকে তার স্বরূপে মণ্ডপে বসানো হবে, তখন সব কষ্ট দূর হয়ে যায়।’
বান্দরবান শ্রীশ্রী সার্বজনীন দুর্গাপূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি রাজেশ্বর দাশ (বিপ্লব) বলনে, ‘পূজা উপলক্ষে আলোকসজ্জা, মেলার আয়োজন, আরতি প্রতিযোগিতা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ আমাদের সব প্রস্তুতি শেষের পথে। দেবী দুর্গাকে বরণ করে নিতে মণ্ডপে মণ্ডপে চলছে প্রস্ততি। এ বছর বান্দরবানের ৭টি উপজেলায় ৩১টি সর্বজনীন পূজামণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের নিরাপত্তার ব্যবস্থার আশ্বাস দিয়েছেন।’
বান্দরবান জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হোসাইন মো. রায়হান কাজেমী বলেন, ‘জেলার সকল পূজামণ্ডপে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। সাদা পোশাকে ও মোবাইল কোর্ট টিম টহলে রয়েছে। পূজামণ্ডপে কোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা না ঘটে সে বিষয়ে পুলিশ প্রশাসন সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বলে জানিয়েছেন।’