ঢাকার ধামরাইয়ে বেতন বৃদ্ধি, সাপ্তাহিক ছুটিসহ নয় দফা দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন আকিজ ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেড নামে একটি কারখানার শ্রমিকরা।
সোমবার (৭ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৬টার দিকে উপজেলার গাংগুটিয়া ইউনিয়নের বারবাড়িয়া এলাকায় কারখানার সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন তারা।
এর আগে সকাল ৬টা থেকে প্রায় আধা ঘণ্টা ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের মানিকগঞ্জগামী লেনে অবস্থান নেন শ্রমিকরা। এতে মহাসড়কে প্রায় দুই কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কারখানার সামনে প্রায় শতাধিক শ্রমিক অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন। এ সময় তারা, ‘আমাদের দাবি মানতে হবে’, ‘বেতন বৈষম্য মানি না’সহ বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছেন।
শ্রমিকরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে দৈনিক ভিত্তিতে কাজ করা শ্রমিকরা প্রতিষ্ঠানের কাছে নানা দাবি দাওয়া জানিয়ে আসছিলেন। প্রতিষ্ঠান তাদের মৌখিকভাবে আশ্বস্ত করলেও দাবি মেনে নেয়নি। তিন মাস আগে বেতন বৃদ্ধির কথা বলা হলেও এখনও শ্রমিকরা বর্ধিত বেতন পাননি। এরই জেরে নয় দফা দাবিতে তারা বিক্ষোভ শুরু করেন।
তাদের ৯ দফা দাবিগুলো হলো- মাসিক বেতন ১৫ হাজার টাকা করা, বেতনের অর্ধেক ঈদ বোনাস দেওয়া, প্রতিদিন সবাইকে ডিউটি দেওয়া, কর্ম দক্ষতার ওপর ভিত্তি করে চাকরি স্থায়ীকরণ করা, কোম্পানির লভ্যাংশ দেওয়া, নাইট বিল দেওয়া, কোম্পানির ভেতরে কোনো শ্রমিক ক্ষতিগ্রস্ত হলে তার দায়ভার কোম্পানিকে নেওয়া, কোম্পানির প্রতিটি বিভাগে নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা ও সাপ্তাহিক ছুটি দেওয়া।
এক নারী শ্রমিক বলেন, সাত হাজার টাকা বেতন পাই। তাতে কিছু হয় না। পরিবার নিয়ে চলতে পারি না। তাদের কাছে বারবার বেতন বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছি। কিন্তু দাবি মানেনি। নিয়মিত ডিউটি দেয় না। কোনো ছুটি নেই। পাঁচ বছর ধরে চাকরি করি। কিন্তু স্থায়ী করেনি। তাই আজ আন্দোলন করছি।
আরেক শ্রমিক বলেন, আমাদের নয়টি দাবি কোম্পানির কাছে জানিয়েছি। যদি তারা দাবি না মানে আমরা প্রতিবাদ চালিয়ে যাব।
এদিকে শ্রমিক বিক্ষোভের জেরে নিরাপত্তার জন্য কারখানার সামনে হাইওয়ে পুলিশ, এপিবিএন, শিল্প পুলিশ, আনসার ও সেনাবাহিনীর সদস্যদের অবস্থান নিয়ে থাকতে দেখা গেছে। এ সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যস্থতায় শ্রমিক ও মালিকপক্ষ দফায় দফায় বৈঠক করে সমঝোতায় আসার চেষ্টা চালায়।
শিল্প পুলিশ-১ এর উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. রেজাউল করিম বলেন, শ্রমিকরা বিভিন্ন দাবি করেছেন। তাদের দাবিদাওয়া নিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করা হচ্ছে। পরিস্থিতি শান্ত ও স্বাভাবিক রয়েছে।
এ বিষয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও দায়িত্বশীল কারো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।