গঠনতন্ত্রেই আছে, কোনো পরিচালক গ্রহণযোগ্য কারণ ছাড়া পরপর তিনটি বোর্ড সভায় অনুপস্থিত থাকলে তার পরিচালক পদ শূন্য হয়ে যায়।
রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর আড়ালে চলে যাওয়া পরিচালকেরা ফারুক আহমেদের নেতৃত্বাধীন বোর্ডে এখনও যোগদান করেননি। তাদের নিয়ে উটকো ঝামেলায় রীতিমত সংকটে পড়েছে বিসিবি। সংকট হচ্ছে, বোর্ডে এখন পরিচালকদের অভাব। ফলে দায়িত্ব বন্টনের কাজ করতে পারছে না বিসিবি।
এরই মধ্যে তিনটি বোর্ড সভা ও একটি জরুরি বোর্ড সভা করেছে ফারুক আহমেদ, নাজমুল আবেদীন ফারুকরা। কিন্তু স্ট্যান্ডিং কমিটি চূড়ান্ত করতে পারেননি। এর পেছনে বেশ কয়েকটি কারণও আছে। সঠিক জায়গায় সঠিক পরিচালক পাচ্ছেন না। ফলে প্রতিটি কাজেই তার হস্তক্ষেপ করা লাগছে। কমিটিগুলো চলছে জোড়াতালি দিয়ে। সবচেয়ে বড় বিভাগ ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের সব সিদ্ধান্ত ফারুক নিজেই দিচ্ছেন। এছাড়া বিপিএল এবং গ্রাউন্ডস বিভাগের পুরোপুরি তদারকি করছেন। এছাড়া ফাহিম সিনহা, নাজমুল আবেদীন ফাহিম, আকরাম খান, ইফতেখার আহমেদ মিঠুরা অলিখিতভাবে দায়িত্ব নিয়ে একাধিক কমিটি দেখভাল করছেন।
গতকাল সোমবার (০৭ অক্টোবর) মিরপুরে বোর্ড কার্যালয়ে বিসিবির পরিচালনা পর্ষদের সভার পর সভাপতি ফারুক আহমেদ অবশ্য বলেছেন, ‘আমরা ডিরেক্টর যারা আছি, তারা কিন্তু ২টি, ৩টি, ৪টি করে বিভাগ দেখছি। কমিটি পুনর্গঠন করতে চেয়ারম্যান, মেম্বার সেক্রেটারি, মেম্বারও দরকার। ওই ধরনের লোকবল এখন নেই। তবে কমিটি না করলেও কাজ থেমে নেই। আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’
অনুপস্থিত বোর্ড পরিচালকদের পদ শূন্যস্থান ঘোষণা করার কাজ থেমে আছে কেন সেই প্রশ্নও উঠছে। যে তালিকায় আছেন ইসমাইল হায়দার মল্লিক, তানভীর আহমেদ টিটু, আ জ ম নাসির, গাজী গোলাম মর্তুজা, ওদেব নিজামরা। সরকার পতন ও পরিবর্তনের পর তারা প্রত্যেকেই গা ঢাকা দিয়েছেন। তবে এঁদের মধ্যে দুয়েকজন বিসিবিতে অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন প্রধান নির্বাহীকে। শিগগিরই বিসিবি তাদের নিয়ে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন ফারুক এমন আভাস দিয়েছেন, ‘একটা ইমার্জেন্সি মিটিংসহ চারটি মিটিং হয়েছে। এখন সময় এসেছে যারা নেই তাদের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার।’
তবে এই কথার প্রতিফলন খুব একটা দেখা যাওয়ার সম্ভাবনা নেই। কেননা তাদেরকে বাদ দেওয়া এবং নতুন পরিচালক আনার ক্ষেত্রে অনেক প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রনালয় এরই মধ্যে জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্কার কমিটি ভেঙে দিয়েছে। ফলে বাইরে থেকে কাউকে আনার সুযোগ নেই। এছাড়া ক্লাব এবং অন্যান্য সংস্থা থেকে যেভাবে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়ে পরিচালক নির্বাচন হন সেই সুযোগও এখন নেই। ক্লাবগুলোতে এখনও স্থিতিশিল পরিবেশ আসেনি। সংস্থাগুলোতেও নেই নির্দিষ্ট প্রতিনিধি। এখন পর্যন্ত বিসিবিতে যে দুজন পরিচালক এসেছেন তারা যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অধীনে সরকারের নির্বাচিত প্রতিনিধি।
সব মিলিয়ে পরিচালনা পরিষদে চাইলেই নতুন কেউ আসতে পারবে না। আবার দ্রুত সময়ে নির্বাচন দেওয়াও সম্ভব নয়। নানামুখী সংকটের কারণে বিসিবি পরিচালনা এখন অনেকটাই জোড়াতালি দিয়ে চলছে। যেখানে ফারুক আহমেদই শেষ ভরসা। সামনে ঘরোয়া ক্রিকেটের মৌসুম শুরু হচ্ছে। জাতীয় ক্রিকেট লিগ শুরু হচ্ছে ১৪ অক্টোবর। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ ২৭ ডিসেম্বর। দুটি লিগ এখন শুরু করাই বড় চ্যালেঞ্জ বিসিবির সামনে।