আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বরেণ্য চিত্রশিল্পী এস এম সুলতানের ৩০তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ১৯৯৪ সালের ১০ অক্টোবর তিনি যশোর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন।
বিশ্ববরেণ্য এই চিত্রশিল্পীর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে নড়াইল জেলা প্রশাসন ও এস.এম সুলতান ফাউন্ডেশনের আয়োজনে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে আজ। এর মধ্যে রয়েছে সুলতান স্মৃতি সংগ্রহশালায় শিল্পীর রুহের মাগফেরাত কামনা করে কোরআন খতম, শিল্পীর সমাধিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি ও দোয়া অনুষ্ঠান, শিশুদের চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা, শিশুদের অংকিত চিত্র প্রদর্শনী, শিল্পীর জীবন ও কর্মের ওপর আলোচনা ও পুরস্কার বিতরণ এবং গ্রামীন লোক সংগীত পটগান।
এস.এম সুলতান স্মৃতি সংগ্রহশালার কিউরেটর চিত্রশিল্পী তন্দ্রা মুখার্জ্জী বলেন, প্রশাসনের দুর্গাপূজার বিভিন্ন কর্মসূচির কারণে এবার অনুষ্ঠান সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে।
শিল্পী সুলতান ১৯৮২ সালে একুশে পদক, ১৯৯৩ সালে স্বাধীনতা পদক, ১৯৮৪ সালে বাংলাদেশ সরকারের রেসিডেন্ট আর্টিস্ট স্বীকৃতি, ১৯৮৬ সালে বাংলাদেশ চারুশিল্পী সংসদ সম্মাননাসহ ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘ম্যান অব দ্য ইয়ার’, নিউইয়র্কের বায়েগ্রাফিক্যাল সেন্টার থেকে ‘ম্যান অব অ্যাচিভমেন্ট’ এবং এশিয়া উইক পত্রিকা থেকে ‘ম্যান অব এশিয়া’ পুরস্কারসহ অসংখ্য সম্মাননা পেয়েছেন।
সৃষ্টিশীল এই শিল্পী নড়াইলের পুরুলিয়ায় ১৯৫৫-৫৬ সালে ‘নন্দন কানন ফাইন আর্ট অ্যান্ড স্কুল, ১৯৭৩-৭৪ সালের দিকে যশোর এম.এম কলেজের একটি পুরোনো হোষ্টেলে একাডেমি অব ফাইন আর্ট স্কুল, ১৯৭৮ সালের দিকে জন্মস্থান নড়াইলের মাছিমদিয়ায় ফাইন আর্ট স্কুল এবং ১৯৮৭ সালে নড়াইলের কুড়িগ্রামে শিশুস্বর্গ নামে শিশুশিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। ১৯৯৩ সালের শিল্পী নিজ উদ্যোগে চিত্রাংকন, নৃত্য ও সঙ্গীত শিক্ষার জন্য ‘লাল বাউল সম্প্রদায়’ নামে একটি সাংস্কৃতিক সংগঠন গড়ে তোলেন।
শিল্পীর মৃত্যুর পর ২০০৩ সালে শহরের কুড়িগ্রামে সরকার শিল্পীর নামে সুলতান কমপ্লেক্স গড়ে তোলে। ২০০৯ সালে শিল্পীর ভক্তরা সুলতানের বাগান বাড়ি শহরের পশ্চিম মাছিমদিয়ায় ‘এস এম সুলতান বেঙ্গল চারুকলা মহাবিদ্যালয় ’প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
এসএম সুলতান ১৯২৪ সালের ১০ আগস্ট নড়াইলের মাছিমদিয়ায় বাবা মেছের আলী ও মা মাজু বিবির ঘরে জন্ম গ্রহণ করেন।
এ বিষয়ে নব নিযুক্ত জেলা প্রশাসক শারমিন আক্তার জাহান বলেন, ইচ্ছা ছিল শিল্পীর এই দিনটি উপলক্ষ্যে নৌকা বাইচ করার। কিন্তু দেশের চলমান অবস্থা ও পরিবেশ-পরিস্থিতি, দুর্গাপূজা এবং সর্বশেষ বাইচের ফান্ড কালেকশান একটু সময় সাপেক্ষ বিষয়। আশা করছি আগামি বছর জাঁকজমকপূর্ণভাবে নৌকা বাইচ অনুষ্ঠিত হবে।