বঙ্গোপসাগরে কক্সবাজারের সেন্টমার্টিন দ্বীপের অদূরে মাছ ধরার সময় তুলে নিয়ে যাওয়া ছয়টি বাংলাদেশি ফিশিং ট্রলার ও ৫৭ জেলেকে ছেড়ে দিয়েছে মিয়ানমারের নৌবাহিনী। এ সময় গুলিতে নিহত বাংলাদেশির মরদেহ ফেরত দেয়।
মুক্তি পাওয়া সকল জেলে ট্রলারসহ শাহপরীরদ্বীপ জেটিতে অবতরণ করেছে। বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) সন্ধ্যায় টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ইউএনও বলেন, মিয়ানমার থেকে ছয়টি ফিশিং ট্রলার, নিহত জেলের মরদেহ, ৫৭ জন জেলেকে কোস্টগার্ডের কাছে হস্তান্তর করেছে মিয়ানমার নৌবাহিনী। দুপুর আড়াইটার দিকে নিহত জেলের মরদেহ ও ১১ জন মাঝি-মাল্লা নিয়ে প্রথমম ট্রলার শাহপরীর দ্বীপ ঘাটে পৌঁছায়। সন্ধ্যায় বাকি ট্রলার ও জেলেরা এসে পৌঁছায়।
বুধবার (৯ অক্টোবর) দুপুরের দিকে সেন্টমার্টিন দ্বীপের দক্ষিণ-পশ্চিমের মৌলভীরশীল বঙ্গোপসাগরের মোহনায় একটি ট্রলারে মিয়ানমারের নৌবাহিনী গুলি ছোড়ে এবং ৬টি ট্রলার আটক করে নিয়ে যায়। গুলিতে বাংলাদেশি জেলে নিহত হয়।
নিহত জেলে ওসমান গনি টেকনাফ উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীরদ্বীপের কোনারপাড়া এলাকার বাচাঁ মিয়ার ছেলে। তিনি শাহপরীরদ্বীপের বাজারপাড়া এলাকার সাইফুল ইসলাম কোম্পানির মালিকানাধীন ট্রলারের জেলে। এ ট্রলারে আরও দুজন জেলে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়।
ফিরে আসা একটি ট্রলারের মালিক সাইফুল ইসলাম জানান, সাগরে মাছ ধরার সময় হঠাৎ করে মিয়ানমারের নৌবাহিনীর সদস্যরা তার ট্রলারটি ধাওয়া করে গুলি বর্ষণ করে। এরপর ছয়টি ট্রলারসহ মাঝি-মাল্লাদের ধরে মিয়ানমারে নিয়ে যায়। যেখানে তার মালিকানাধীন ট্রলারে গুলিবিদ্ধ তিন জনের মধ্যে একজন মারা যায়। বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) দুপুর ১২টার দিকে ওই ট্রলারটি ছেড়ে দেওয়া হয়।
অপর ট্রলার মালিক মতিউর রহমান বলেন, সন্ধ্যায় ৫টি ট্রলারসহ জেলেরা সেন্টমার্টিন ঘাট হয়ে শাহপরীরদ্বীপ ঘাটে পৌঁছায়।
টেকনাফে দায়িত্বরত নৌপুলিশের উপপরিদর্শক আবুল কাসেম জানান, গুলিতে নিহত জেলের মরদেহ কোস্টগার্ডের পক্ষ থেকে হস্তান্তর করা হয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে, সোমবার (৭ অক্টোবর) সকালে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ মোহনা থেকে পাঁচ বাংলাদেশি জেলেকে ধরে নিয়ে যায় মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন আরাকান আর্মি। পরে মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) দুপুরে পাঁচ বাংলাদেশি জেলেকে বিজিবির কাছে হস্তান্তর করেছে সংগঠনটি।