সাতসতেরো

ধুনুচি নাচ কেন নাচা হয়

শুরু হয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা। ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্যে দিয়ে এই উৎসব পালিত হয়। পূজার প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে দেখা যায় ধুনুচি নাচ। অনন্য ভঙ্গিতে পরিবেশিত হয় এই নাচ। এটি একটি ঐতিহ্যবাহী নাচ। যেখানে ভক্তরা মাথায় ধুনুচি পাত্র নিয়ে ভারসাম্য রেখে নেচে থাকেন। ধুনুচি হচ্ছে মাটির এক ধরনের বিশেষ পাত্র। যে পাত্রে  ধূপ, নারকেল খোসা এবং অন্যান্য হবন বা যজ্ঞ সামগ্রী পোড়ানো হয়। যা ধোঁয়া এবং সুগন্ধ ছড়িয়ে দেয়। বিশ্বাস করা হয় যে এই সুঘ্রাণ দুর্গা দেবীকে খুশি করে। 

ধুনুচি নাচ পরিবেশন করা হয় সপ্তমী থেকে মহানবমীর দিন পর্যন্ত। মহানবমীতে এই নৃত্যের বিশেষ তাৎপর্য আছে। দেখা যায় যে, ধুনুচি নাচে নারীরা নারীরা বিভিন্ন ভঙ্গিতে নাচতে গিয়ে মাথায় ধুনুচিকে ভারসাম্যপূর্ণ করে। এই দৃশ্য দেখতে আকর্ষণীয়। এই নাচে সাধারণত মানুষ ধুনুচি হাতে ধরে নাচে, কিন্তু কিছু মানুষ এতই পারদর্শী যে মুখ দিয়ে ধরেও নাচে।

ধুনুচি নাচে যে কেউ অংশ নিতে পারে। বিশ্বাস করা হয়, মহিষাসুরকে বধ করার আগে দেবী দুর্গা তার ক্ষমতা আরও বাড়ানোর জন্য ধুনুচি নাচ নেচেছিলেন। তাই দেবী দুর্গার সামনে ক্ষমতা প্রদর্শন করতেও এই নাচ নেচে থাকেন দেবীর ভক্তরা। বিশ্বাস করা হয় যে,  ধুনুচিতে ধূপ ও চাল পোড়ালে দেবী দুর্গা প্রসন্ন হয়। এজন্য ধুনুচিতে ধূপ ও চাল পোড়ানো হয়। এই নাচের সময় দেবী দুর্গার প্রশংসা করা হয়। এবং তার কাছে আশীর্বাদ চাওয়া হয়। 

এই নাচ পরিবেশন করার জন্য,  দুর্গাভক্তরা তাদের একটি বা উভয় হাতে জ্বলন্ত ধুনুচি ধরে রাখেন। এবং অনেকে একযোগে নাচেন। এই সময় তাদের সমন্বয় স্পষ্টভাবে দেখা যায়। এই নৃত্য পরিবেশন করার সময়, নারীদেরকে শাড়ি পরতে দেখা যায়। আর পুরুষেরা পরেন ধুতি-কুর্তা বা কুর্তা পায়জামা।