কুড়িগ্রামে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শিক্ষার্থী আশিক রহমান হত্যার ঘটনায় আওয়ামী লীগ নেতা, সাংবাদিকসহ ১০৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে ৫০০ থেকে ৬০০ জনকে।
বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী রুহুল আমিন বাদী হয়ে কুড়িগ্রাম সদর থানায় মামলাটি করেন। বাদী রুহুল আমিন কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার মোগলবাসা ইউনিয়নের সেনের খামার গ্রামের বাসিন্দা। তবে তিনি নিহত আশিকুরের পরিবারের কোনো সদস্য বা স্বজন নন।
এদিকে জেলার মূলধারার তিন সাংবাদিককে জড়িয়ে হত্যা মামলা দায়ের হওয়ার ঘটনায় সাংবাদিক মহলে অসন্তোষ এবং সুধীমহলে বিরূপ প্রতিক্রিয়া বিরাজ করছে। দাবি করা হচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে ঘটনার সাথে জড়িত থাকার সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ উল্লেখ করা হয়নি।
নিহত আশিকুর কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার বুড়াবুড়ি ইউনিয়নের সাতভিটা গ্রামের কৃষক চাঁদ মিয়ার ছেলে। উলিপুরের পাঁচপীর ডিগ্রি কলেজের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন তিনি।
মামলার উল্লেখযোগ্য আসামি হলেন কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আমান উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু, কুড়িগ্রাম প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আবদুল খালেক ফারুক, সাংবাদিক হুমায়ুন কবির (সূর্য) ও ইউসুফ আলমগীর।
কুড়িগ্রাম সনাক এর সভাপতি অ্যাডভোকেট আহসান হাবীব নীলু বলেন, এই তিন মিডিয়াকর্মী টিআইবির অনুপ্রেরণায় গঠিত সচেতন নাগরিক কমিটির কুড়িগ্রামের সদস্য। তারা দীর্ঘদিন ধরে দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই, সকল বৈষম্যের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন। ঘটনার দিন তারাসহ অধিকাংশ সাংবাদিক তৎকালীন সরকারী দলের হুমকি ধামকির রোষানলে পড়েছিলো।
কুড়িগ্রাম প্রেসক্লাবের সভাপতি রাজু মোস্তাফিজ বলেন, গত ৪ আগস্ট আন্দোলন চলাকালীন সময় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল খালেক ফারুকসহ বেশ কয়েকজন সাংবাদিকরা কুড়িগ্রাম প্রেসক্লাবে অবরুদ্ধ ছিলেন। পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে আব্দুল খালেক ফারুক নিহত আশিকের দাফনের সংবাদ সংগ্রহ করে এবং সেটি প্রচারিত হয়েছে। মামলায় অভিযুক্তরা কোনো রাজনৈতিক দলের সাথে সম্পৃক্ত নয়। তারা নিরপেক্ষ ভাবে তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
এ বিষয়ে মামলার বাদী রহুল আমিন বলেন, ১০৪ জন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলার অভিযোগ দায়ের করেছি। তবে আমি কোনো সাংবাদিককে আসামি করে মামলা করিনি। যারা অভিযুক্ত তাদের নামে মামলা করেছি।
৪ আগস্ট শহরের ঘোষপাড়ায় আওয়ামী লীগ পুলিশ ও আন্দোলকারী এই ত্রিমুখী সংঘর্ষে আঘাতপ্রাপ্ত হয়। পরে ঢাকায় পিজি হাসপাতালে দীর্ঘ ২৭ দিন চিকিৎসা শেষে ১ সেপ্টেম্বর মারা যায়।
কুড়িগ্রাম সদর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাজমুল আলম বলেন, আশিক হত্যার ঘটনায় থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। সেখানে এজাহার নামীয় ১০৪ জনের নাম উল্লেখ রয়েছে। মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে।