‘মিস ইউ অলওয়েজ মাহমুদউল্লাহ’—এমন একটি প্ল্যাকার্ড হাতে রাজিব গান্ধী আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের সামনে ঘুরছিলেন বাংলাদেশের আইকনিক ফ্যান শোয়েব আলী তথা টাইগার শোয়েব।
ভারতের ভ্রমণ ভিসার নিষেধাজ্ঞাসহ টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের বাজে পারফরম্যান্সের কারণে এবার স্টেডিয়ামে দর্শকদের সংখ্যা ছিল হাতে গোণা। তাইতো মহমুদউল্লাহ রিয়াদের অবসরের ম্যাচে হায়দরাবাদে শুভ কামনা জানানোর জন্য শোয়েব ছাড়া যেন ছিল না কোনো দর্শকও।
তবে সতীর্থরা মাহমুদউল্লাহকে গার্ড অব অনার দিয়েছেন। দলের পক্ষ থেকে ক্রেস্ট প্রদান করেছেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত।
১ সেপ্টেম্বর ২০০৭ সালে কেনিয়ার বিপক্ষে শুরু হয়েছিল মাহমুদউল্লাহর টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ার, হায়দরাবদে ১২ অক্টোবর ২০২৪—এ ভারতের বিপক্ষে এসে থামলো ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত সংস্করণে তার যাত্রা।
ম্যাচ শুরুর আগে বিদায়ী ম্যাচ নিয়ে কথা বলছেন বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি ১৪১টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলা মাহমুদউল্লাহ। এমন মুহুর্ত কি আবেগের? ‘এমন প্রশ্নে তার উত্তর, ‘হ্যাঁ, এটা অবশ্য আমার জন্য আবেগের মূহুর্ত। আমি অনেক বছর ধরে বাংলাদেশের হয়ে খেলতে পেরে নিজেকে ভাগ্যবান মনে করছি। এখন মুভ অন করার সময় এবং তরুণদের জন্য আমার জায়গা ছেড়ে দেওয়ার সময়। ওয়ানডে সংস্করণেও বিবেচনার চেষ্টা করব।’
অভিষেকের পর থেকে এখন পর্যন্ত ১৪১ ম্যাচে ২৩.৪৮ গড়ে ২ হাজার ৪৩৬ রান করেন। স্ট্রাইক রেট ১১৭.৫১। বল হাতে নিয়েছেন ৪০ উইকেট। বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত খেলেছে ১৭৯ টি-টোয়েন্টি, মাহমুদউল্লাহ মাঠে ছিলেন অধিকাংশ ম্যাচেই।
ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত সংস্করণে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন মাহমুদউল্লাহ। ২০১৯ সালে সাকিব আল হাসানের নিষিদ্ধ হওয়ার পর অধিনায়ক হন মাহমুদউল্লাহ। ভারত সিরিজে শুরু হয়েছিল অধিনায়কত্বের জীবন। পাঁচ বছর পর একই দেশের বিপক্ষে থামছেন তিনি।
মাহমুদউল্লাহর অধীনে ২০২২ বিশ্বকাপ খেলে বাংলাদেশ। স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে হারের পর সুপার টুয়েলভে উঠলেও একটি ম্যাচও জিততে পারেনি সেবার। পারফরম্যান্সের কারণে নেতৃত্ব হারিয়েছেন, বাদ পড়েছেন দল থেকে। কঠোর অনুশীলন ও অধ্যবসায়ে দলে ফিরলেও এখন পারফরম্যান্সের গ্রাফ তলানিতে।
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে আরও ধারবাহিক হতে হবে বাংলাদেশকে—এমন মন্তব্য করেছেন নিজের শেষ ম্যাচে। এ সময় তিনি তুলনা করেন নিজের শুরু আর শেষ নিয়ে।
‘আমি মনে করি যদি অর্জনগুলো বিবেচনা করেন এই সংস্করণে আমাদের ওঠা-নামা ছিল। যখন আমি ২০০৭ সালে ড্রেসিংরুমে প্রবেশ করি তখন এত জয়ের পরিবেশ ছিল না। ১৭ বছর পর ড্রেসিংরুমের পরিবেশ অনেক ভালো, ছেলেরা যেখানেই খেলুক, প্রতিপক্ষে যেই হোক জয়ের জন্য মরিয়া থাকে। আমি মনে করি আমাদের আরও কিছুটা ধারাবাহিক হতে হবে এই সংস্করণে।’