আন্তর্জাতিক

ইসরায়েলি সেনা ক্যাম্পে হিজবুল্লাহর ড্রোন হামলায় নিহত ৪, আহত ৬৭

ইসরায়েলের হাইফার দক্ষিণে বেনইয়ামিনা এলাকায় দেশটির সামরিক বাহিনীর গোলানি ব্রিগেড ক্যাম্পে ড্রোন হামলা চালিয়েছে লেবাননের ইরান-সমর্থিত গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ। এতে ৪ ইসরায়েলি সেনা নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৬০ জনেরও বেশি। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে।

আইডিএফের বিবৃতির বরাত দিয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, গতকাল রোববার সন্ধ্যায় ইসরায়েলের হাইফার বেনইয়ামিনায় অবস্থিত একটি সামরিক প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে হামলা চালিয়েছে হিজবুল্লাহ। ইসরায়েলের এ সেনা ক্যাম্পটি ইসরায়েল–লেবানন সীমান্ত থেকে প্রায় ৭০ কিলোমিটার দক্ষিণে।

আইডিএফ প্রথমে সামরিক রেডিওতে তিনজন নিহত ও সাতজন আহত হওয়ার খবর প্রচার করে। পরে ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়, নিহত হয়েছেন চারজন ইসরায়েলি সেনা। আহত হয়েছেন ৬৭ জন। আহতদের মধ্যে সাতজনের অবস্থা গুরুতর।

ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমের প্রচার করা ফুটেজে দেখা গেছে, আহতদের হেলিকপ্টারসহ জরুরি যানবাহনে সাহায্য করা হচ্ছে। 

আহতদের মধ্যে অনেককে নিকটবর্তী হাদেরার হিল্লেল ইয়াফে মেডিকেল সেন্টারে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে - অন্যদের তেল হাশোমার, হাইফা, আফুলা এবং নেতানিয়ার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

রোববার মধ্যরাতে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হাগারি এক বিবৃতিতে বলেন, ‘ঘটনাস্থলের আশেপাশের পরিস্থিতি পরীক্ষা করা হচ্ছে, কারণ ড্রোনটি আঘাত হানার সময় কোনো সতর্কতা সাইরেন বেজে ওঠেনি। আমরা তদন্ত করে দেখবো কিভাবে একটি ইউএভি (মনুষ্যবিহীন আকাশযান) সতর্কতা ছাড়াই নিরাপত্তা লঙ্ঘন করতে পারে ও একটি ঘাঁটিতে আঘাত করতে পারে।’ 

তিনি বলেন, ‘ইসরায়েল যুদ্ধের শুরু থেকেই ইউএভি হুমকির সম্মুখীন হয়েছে। আমাদের আরও ভালো সুরক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। আমরা এই ঘটনাটি তদন্ত করব, এটি থেকে শিখব এবং উন্নতি করব।’

এদিকে, মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগন ইসরায়েলকে থাড (টারমিনাল হাই অ্যালটিচুড এরিয়া ডিফেন্স) আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। 

গতকাল রোববার এক ঘোষণায় পেন্টাগন জানিয়েছে, ওয়াশিংটন একটি প্রত্যাশিত ইসরায়েলি প্রতিশোধমূলক আক্রমণে ইরানের প্রতিক্রিয়ার ক্ষেত্রে ইসরায়েলকে রক্ষা করার জন্য দেশটিতে থাড প্রতিরক্ষাব্যবস্থা পাঠাবে।

থাড ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা শত্রুর ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রকে আকাশেই ধ্বংস করে। এই ব্যবস্থাটি ট্রাকে করে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে পরিবহন করা যায়। স্বল্প, মাঝারী ও দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রকে আকাশেই ধ্বংস করতে সক্ষম থাডের  প্রজেক্টাইল। এই প্রজেক্টাইল ক্ষেপণাস্ত্রটির গতিপথ অনুসরণ করে এবং এটিকে ভূপাতিত না করা পর্যন্ত পিছু ছাড়ে না। ইসরায়েলের কাছে থাকা আয়রন ডোম প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার চেয়ে এটি অনেক বেশি কার্যকর। মাঝারি ও দূরপাল্লার আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করার ক্ষেত্রেও থাডের সফলতার হার সবচেয়ে বেশি।

পেন্টাগনের এক কর্মকর্তা বলেছেন, এই সিস্টেমটি পরিচালনার জন্য ইসরায়েলে প্রায় ১০০ মার্কিন সেনা মোতায়েন করা হবে।