প্রেমিকার সঙ্গে অন্তরঙ্গ মুহূর্ত কাটাতে গিয়েছিলেন প্রেমিক সাদ্দাম হোসেন। স্থানীয়রা বিষয়টি টের পেয়ে তাদেরকে আটকে দেন। পরে প্রেমিকার সঙ্গে প্রেমিকের বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন তারা। প্রেমিকা বিয়েতে রাজি থাকলেও প্রেমিক এবং তার পরিবার দ্বিমত পোষণ করে। এ নিয়ে রাতভর চলে আলোচনা। শেষ পর্যন্ত বিয়েতে রাজি না হওয়ায় সোমবার (১৪ অক্টোবর) প্রেমিকা মামলা করলে পুলিশ প্রেমিককে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠায়।
স্থানীয়রা জানান, সাদ্দাম হোসেন সারিয়াকান্দি উপজেলার ভেলাবাড়ি গ্রামের প্রবাস ফেরত যুবক। তার বাবার সঙ্গে ধুনট উপজেলার একটি মেয়ের বাবার সুসম্পক ছিল। সেই সুবাদে স্বামী পরিত্যাক্তা মেয়েটির সঙ্গে সাদ্দামের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এ কারণে সাদ্দাম প্রায় মেয়েটির সঙ্গে দেখা করতে যেতেন।
গতকাল রোববার সকাল ১০টার দিকে প্রেমিকার দর্জির দোকানে যান সাদ্দাম হোসেন। কিছুক্ষণ পর তাদের অন্তরঙ্গ অবস্থায় স্থানীয়রা আটক করে বলে অভিযোগ ওঠে। পরে দিনব্যাপী দরবার চলে সেখানে। দরবারে সাদ্দাম হোসেনের সঙ্গে মেয়েটির বিয়ে দেওয়ার কথা ওঠে। তবে, আটকের সময় রাজি থাকলেও সন্ধ্যার দিকে বিয়েতে অসম্মতি জানাতে থাকেন সাদ্দাম।
এর মধ্যে সাদ্দাম হোসেনকে জিম্মি ও জোর জবরদস্তি করে বিয়ে দেওয়া হচ্ছে এমন খবর পেয়ে সন্ধ্যা ৬ টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। বিষয়টি আইনীভাবে সুষ্ঠু সমাধানের জন্য সাদ্দাম হোসেনকে থানা হেফাজত নিতে চায় পুলিশ। মেয়ের পরিবার ও স্থানীয়দের মধ্যে এতে সংশয় তৈরি হয়। সাদ্দাম হোসেনকে পুলিশের কাছে ফেরত দেওয়া নিয়ে চলতে থাকে রাতভর আলোচনা। পরে ধুনট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুল আলমের নির্দেশে সাদ্দামকে গাড়িতে তোলে পুলিশ। এক পর্যায়ে স্থানীয় জনতা উত্তেজিত হয়ে ওঠে। তারা ওসিকে ঘটনাস্থল ছেড়ে যেতে বাধা দেয়। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রাত আড়াইটার দিকে সেনাবাহিনীর একটি দল ঘটনাস্থলে যায়। তারা গ্রামবাসীকে বুঝিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে পুলিশ সদস্যদের নিয়ে ফিরে যায়।
এ বিষয়ে সাদ্দামের পরিবারের কারো কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
প্রেমিকার বাবা বলেন, ‘আমার মেয়ের সম্মান নষ্ট হয়েছে। তাকে বিয়ে দিতে হবে। আমি সুষ্ঠু বিচার চাই।’
ধুনট থানা পুলিশ সূত্র জানায়, সাদ্দাম হোসেনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেছে তার কথিত প্রেমিকা। এ মামলায় সাদ্দামকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
ধুনট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুল আলম বলেন, ‘প্রেমিকার করা মামলায় সাদ্দাম হোসেনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। গতকাল রাতে স্থানীয়দের সঙ্গে একটু ঝামেলা হয়েছিল। স্থানীয়দের দাবি ছিল, ছেলেকে তাদের হাতে ছেড়ে দিতে হবে। নিয়ম অনুযায়ী আমরা তা করতে পারি না। পরে সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ছাড়া কোনো ঝামেলা হয়নি।’