লক্ষ্মীপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গুলিবিদ্ধ হয়ে শহিদ সাদ আল আফনান পাটওয়ারী এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৪.১৭ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন। মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) দুপুরে আফনানের মা নাছিমা আক্তার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আফনান লক্ষ্মীপুর ভিক্টোরি কলেজের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এবছর এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন। তিনি লক্ষ্মীপুর পৌর শহরের বাঞ্চানগর গ্রামের বাস টার্মিনাল এলাকার মৃত সালেহ আহমেদের ছেলে।
আফনানের মা নাছিমা আক্তার বলেন, ‘আফনানের পাসের খবর জানতে পেরে আমি অনেক খুশি। তবে, যার সঙ্গে এই আনন্দ উদযাপন করব, সে তো আমার কাছে নেই। গুলি করে আমার ছেলেকে মেরে ফেলা হয়েছে। আমার কোল শূন্য করে দিয়েছে ঘাতকরা।’
শহিদ সাদ আল আফনান পাটওয়ারী
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে লক্ষ্মীপুরের সমন্বয়ক এনামুল হক বলেন, আফনান লক্ষ্মীপুরের প্রথম শহিদ। তিনি এইচএসসিসহ দুনিয়ার সব পরীক্ষায় সফলতার সহিত কৃতকার্য হয়েছেন। আমরা দোয়া করি, আল্লাহ যেন পরকালেও তাকে সফলতা দান করেন। আল্লাহ যেন তাকে শাহাদাতের সর্বোচ্চ মর্যাদা দান করেন।’
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে লক্ষ্মীপুরের আরেক সমন্বয়ক আরমান হোসেন বলেন, ‘কোটা বৈষম্য দূর করতে যারা আন্দোলন করেছেন তারা সবাই মেধাবী ছিলেন। মেধার স্বীকৃতি দেওয়া ও নেওয়ার জন্য মেধাবী শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করেছেন। তাদের রক্ত ঢেলে দিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, শহিদ আফনান জিপিএ-৪.১৭ পেয়ে মেধার স্বাক্ষর রেখেছেন। এতে এটাই প্রমাণিত হয়েছে, প্রকৃত মেধাবীরাই এ আন্দোলন করেছেন।
লক্ষ্মীপুর ভিক্টোরি কলেজের অধ্যক্ষ হারুনুর রশিদ বলেন, ‘আফনান ভালো ফলাফল করেছে। এটা আনন্দের। সে তো আমাদের মাঝে নেই। তার ফল শুনে আনন্দিত হওয়ার কথা থাকলেও আমি তা হয়নি।
প্রসঙ্গত, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত ৪ আগস্ট লক্ষ্মীপুরের মাদাম ব্রিজ এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান সাদ আল আফনান পাটওয়ারী। তার মৃত্যুর ঘটনায় গত ১৪ আগস্ট মা নাছিমা আক্তার বাদী হয়ে সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম সালাহ উদ্দিন টিপুকে প্রধান করে ৭৫ জনের নাম উল্লেখ ও নাম না জানা ৫০০-৬০০ জনকে আসামি করে মামলা করেন।