বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত ৫ আগস্ট সাভারে গুলিবিদ্ধ হয়ে শহিদ হন এইচএসসি পরীক্ষার্থী নাফিসা হোসেন মারওয়া। তার স্বপ্ন ছিল ফটোগ্রাফার বা গ্রাফিক্স ডিজাইনার হওয়ার। ছোট বেলা থেকেই পড়াশোনার পাশাপাশি ছবি আঁকা ও ছবি তোলায় ছিল আগ্রহ। আজ তার এইচএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে। তবে, সেই রেজাল্ট জেনে যেতে পারলেন না তিনি।
আবুল হোসেন ও কুলসুম বেগম দম্পতির দুই মেয়ের মধ্যে সবার বড় ছিলেন নাফিসা। গ্রামের বাড়ি শরীয়তপুর হলেও বাবার কর্মস্থল গাজীপুরের টঙ্গীতে পরিবারের সঙ্গে বসবাস করতেন তিনি।
স্কুলের গন্ডি পেড়িয়ে সাভারে এসে ভর্তি হন কলেজে। পরিবারের বাড়তি উপার্জনের উদ্দেশ্যে তার মা কুলসুম বেগম প্রবাসে চলে যান। এরপর থেকেই নাফিসা বেশিরভাগ সময় থাকতেন সাভারের নামাবাজার এলাকায় মামার বাসায়। এবছর শাহাজউদ্দিন সরকার মডেল হায়ার সেকেন্ডারি স্কুল থেকে পরীক্ষা দিয়ে এইচএসসিতে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ- ৪.২৫ উত্তীর্ণ হয়েছেন এই শিক্ষার্থী।
মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) বিকেলে সাভারের নামাবাজার এলাকায় মামার বাসায় গিয়ে কথা হয় নাফিসার পরিবারের সঙ্গে। স্মৃতিবিজড়িত ভেজা চোখে নিজের অনুভূতি জানান নাফিসার মা কুলসুম বেগম। তিনি বলেন, ‘নাফিসার ইচ্ছা ছিল ফটোগ্রাফার বা গ্রাফিক্স ডিজাইনার হওয়ার। রেজাল্ট বের হলে তাকে ল্যাপটপ কিনে দেওয়ার কথা ছিল। নিজের আয়ের টাকা ও আমার টাকা মিলিয়ে জমি কিনবে, বাড়ি বানাবে এমন স্বপ্ন দেখতো নাফিসা।’
নাফিসার ছোট মামা হযরত আলী রেজা বলেন, ‘কিছুটা জেদি স্বভাবের নাফিসা ছিলেন খুবই আদরের। গত ৩ আগস্ট থেকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সরাসরি আন্দোলনে অংশ নেয় নাফিসা। গত ৫ আগস্ট আন্দোলনরত অবস্থায় সাভারে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান তিনি। পরবর্তীতে তার বাবার ইচ্ছায় টঙ্গীতে তাকে দাফন করা হয়।’
গত ৫ আগস্ট সাভারের থানা রোড মুক্তির মোড় এলাকায় বিকেল ৩টার দিকে আন্দোলনে গুলিতে মারা যান নাফিসা বলেও জানায় পরিবার।