বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীকে শ্লীলতাহানি ও এর প্রতিবাদ করায় চার শিক্ষার্থীকে বেধড়ক মারধর করেন বহিরাগতরা। এর প্রতিবাদে মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) রাত ১০টায় পার্ক মোড়ে রংপুর-লালমনিরহাট মহাসড়ক অবরোধ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা বলেন, প্রায়ই বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে বহিরাগত দ্বারা হেনস্থা শিকার হন শিক্ষার্থীরা। এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের এক নারী শিক্ষার্থীকে উত্যক্ত করে বহিরাগত কয়েকজন যুবক। এ সময় তার সহপাঠীরা তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ জানায়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বহিরাগতরা ওই ভুক্তভোগীর সহপাঠিদের বেধড়ক মারধর করে। এতে চার শিক্ষার্থী আহত হন।
এদিকে, এ খবর দ্রুত জানাজানি হলে জড়িতদের বিচারের দাবিতে সড়ক অবরোধ করেন বেরেবি শিক্ষার্থীরা। ঘণ্টাব্যাপী এ অবরোধে কর্মসূচির কারণে সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ১৪তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল হাসান দীপ্ত বলেন, সন্ধায় পরে আমাদের বিভাগের এক নারী শিক্ষার্থীকে উত্যক্ত করে বহিরাগত বখাটেরা। পরে বিষয়টি দেখতে পেয়ে আমরা তিন-চারজন এগিয়ে গিয়ে প্রতিবাদ করার চেষ্টা করি। এতে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে আমাদের উপর হামলে পড়ে। একপর্যায়ে তারা এলোপাথারি আমাদের ওপর মারপিট শুরু করে। এ ঘটনায় আমিসহ আরো তিন সহপাঠী আহত হই। এ বিষয়টি ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়লে আমাদের সহপাঠীরা এসে সড়ক অবরোধ করে। আমরা বহিরাগত টোকাই মুক্ত একটি শান্তিপূর্ণ ক্যাম্পাস চাই। এছাড়া এ ঘটনা সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
প্রত্যক্ষদর্শী গণ যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ১৪ ব্যাচের শিক্ষার্থী কামরুল ইসলাম শান্ত বলেন, বহিরাগত কয়েকজন যুবক ক্যাম্পসের এক ছাত্রীকে উত্যক্ত করতেছিল। এ সময় আমাদের বিভাগের মামুন ভাই, কামাল ভাই, বিধান ভাই বাধা দিলে বহিরাগতরা তাদের মারধর করেন। এরপর আমরা এগিয়ে গেলে তারা ফোনে আরও ১০-১৫ জনকে ডেকে নিয়ে এসে মারধর করেন। এতে আমার বন্ধু আব্দুল্লাহ আল হাসান দীপ্ত চোখে আঘাত লাগে। পরে তারা পালিয়ে যায়।
পরে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. শওকত আলী ও তাজহাট থানা পুলিশ। এ ঘটনায় উপাচার্যের পদক্ষেপে দুজনকে আটক করা হলে অবরোধ তুলে নেয় শিক্ষার্থীরা।
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. শওকত আলী জানান, বহিরাগত দ্বারা এক নারী শিক্ষার্থীর উত্ত্যক্ত করার ঘটনায় রাত ১০টায় শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে। এমন ঘটনা শুনতে পেয়ে আমি তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে ছুটে আসি। আমার সঙ্গে তাজহাট থানা পুলিশও ঘটনাস্থলে আসে। বিষয়টি নিয়ে মহানগর পুলিশ প্রধানের সঙ্গে কথা হয়েছে। এ ঘটনায় যারা জড়িত তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে পুলিশকে বলা হয়েছে।
তিনি বলেন, ক্যাম্পাসে আর যাতে এ রকম অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা না ঘটে, সে বিষয়ে পুলিশ প্রশাসনকে পদক্ষেপ গ্রহণের কথা বলা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার বিষয়ে আশ্বাস প্রদান করলে শিক্ষার্থীরা অবরোধ তুলে নেয়।