কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডের অধীন ২০২৪ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় ফেল করা শিক্ষার্থীদের পাস করানোর দাবিতে বিক্ষোভ হয়েছে। রোববার (২০ অক্টোবর) সকাল থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত শিক্ষাবোর্ডের সামনে অবস্থান নিয়ে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করেন। ফলে বোর্ডে বিভিন্ন কাজে আসা শিক্ষক ও সেখানকার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ভোগান্তিতে পড়েন।
পরীক্ষায় অকৃতকার্য শিক্ষার্থীরা জানান, কুমিল্লা বোর্ড কর্তৃপক্ষ মনগড়া ফল দিয়েছে। কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের ইংরেজি পরীক্ষার প্রশ্ন সহজ হলেও গণহারে সবাইকে এই পরীক্ষায় ফেল করানো হয়েছে। সিলেট বোর্ডে মাত্র দুই বিষয়ে পরীক্ষায় সবাইকে পাস করানো হয়েছে। কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডে সঠিকভাবে খাতা মূল্যায়ন করা হয়নি। সাবজেক্ট ম্যাপিংও সঠিকভাবে করা হয়নি।
আজ দুপুরে শিক্ষাবোর্ডে গিয়ে দেখা গেছে, শতাধিক শিক্ষার্থী বিক্ষোভ করছেন। তাদের চিৎকার-চেচামেরির কারণে বোর্ডে সেবা নিতে আসা মানুষজন ভোগান্তিতে পড়েছেন।
কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান নিজামুল করিম বলেন, ‘কোনো শিক্ষার্থী পরীক্ষায় ফেল করলে এতে বোর্ড কর্তৃপক্ষের তো কিছু করার নেই। শিক্ষার্থী একটা বিষয়ে খারাপ করলে সম্পূর্ণ ফল ফেল আসবে এটাই স্বাভাবিক।’
তিনি আরো বলেন, ‘এখানে কারো কোনো হাত নেই। তারপরও আগামী তিনদিনের মধ্যে সব শিক্ষা বোর্ডের সাথে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত জানানো হবে।’
প্রসঙ্গত, গত ১৫ অক্টোবর চলতি বছরের এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা করা হয়। চলতি বছর কুমিল্লা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডে পাসের হার ৭১ দশমিক ১৫ শতাংশ, যা গত দুই বছরের তুলনায় কম। ফলাফলে ছেলেদের তুলনায় এগিয়ে ছিল মেয়েরা।
কুমিল্লা বোর্ড সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ড থেকে অংশগ্রহণ করেছে ১ লাখ ১২ হাজার ৩১২ জন শিক্ষার্থী। সব বিষয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে ৭৯ হাজার ৯০৫ জন, যা মোট ফলাফলের ৭১ দশমিক ১৫ শতাংশ। এবারের পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে ৭ হাজার ৯২২ জন, যা মোট ফলাফলের ৭ দশমিক ০৫৪ শতাংশ।
২০২৩ সালে এ বোর্ডে পাসের হার ছিল ৭৫ দশমিক ৩৯ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছিল ৫ হাজার ৬৫৫ জন। এছাড়া ২০২২ সালে পাসের হার ছিল ৯০ দশমিক ৭২ শতাংশ। জিপিএ-৫ ছিল ১৪ হাজার ৯৯১ জন।
এ বছর ৪৬ হাজার ৯৪১ জন ছাত্র ও ৬৩ হাজার ৬৩৯ জন ছাত্রী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে। এর মধ্যে ৪৮ হাজার ৬৫ জন ছাত্রের মধ্যে পাশ করেছে ৩২ হাজার ৫৫৮ জন ও ৬৪ হাজার ২৪৭ জন ছাত্রীর মধ্যে পাস করেছে ৪৭ হাজার ৩৪৭ জন। জিপি-৫ পেয়েছে ২ হাজার ৯৬৮ জন ছাত্র ও ৪ হাজার ৯৫৪ জন ছাত্রী।