বকেয়া মজুরির দাবিতে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি শুরু করেছেন রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ন্যাশনাল টি কোম্পানির (এনটিসি) চা শ্রমিকরা। সোমবার (২১ অক্টোবর) সকাল থেকে এনটিসির ১৬টি চা বাগানের শ্রমিকেরা কাজে যোগ না দিয়ে কর্মবিরতি শুরু করেন।
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে এনটিসির বিভিন্ন চা বাগানের শ্রমিকনেতারা গতকাল রোববার বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে আজ থেকে এই কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত নেন। শ্রমিকদের ভাষ্য, তাদের পাঁচ সপ্তাহের মজুরি বকেয়া আছে। মজুরি না পেয়ে অর্থকষ্ট নিয়ে দিন কাটাচ্ছেন তারা। মালিকপক্ষ বকেয়া মজুরি পরিশোধ না করলে তারা কাজে ফিরবেন না।
বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন জানিয়েছে, সারা দেশে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ন্যাশনাল টি কোম্পানির ১৬টি চা বাগান আছে। এসব বাগানে প্রায় ১৭ হাজার শ্রমিক কাজ করেন। তাদের আয়ে ৩০ হাজার মানুষের ভরণপোষণ নির্ভর করে।
কমলগঞ্জের পদ্মছড়া চা-বাগানের বাগান পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি কৃষ্ণলাল দেশোয়ারা বলেন, ‘আমাদের শ্রমিকদের ঘরে খাবার নেই। তারা অনেক কষ্ট করে চলছেন। এখন না খেয়ে শ্রমিকেরা কাজ করবেন কীভাবে?’
এনটিসি মালিকানাধিন চাম্পারায় চা বাগানের শ্রমিক জগত দাস বলেন, ‘দীর্ঘ দিন ধরে শ্রমিকদের পাওনা মজুরি না দেওয়ার কারণে আন্দোলনের ডাক দেওয়া হয়েছে।’
এই কর্মসূচিতে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সমর্থন আছে বলে জানিয়েছেন সংগঠনটির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নিপেন পাল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কমলগঞ্জ উপজেলার এনটিসির এক ব্যবস্থাপক জানান, শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি না দেওয়ায় তারা মানবেতর জীবন যাপন করছেন। টাকা না থাকায় শ্রমিকদের পেমেন্ট দেওয়া যাচ্ছে না। জরুরি ভিত্তিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে আমরা আশাবাদী।
ন্যাশনাল টি কোম্পানির মহাব্যবস্থাপক এমদাদুল হক জানান, শ্রমিকদের মজুরি দেওয়ার জন্য তারা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তাদের পরিচালনা পর্ষদ পূর্ণাঙ্গ পুনর্গঠন না হওয়ার কারণে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক থেকে ঋণ পেতে সমস্যা হচ্ছে। আশা করা যাচ্ছে, শিগগিরই পূর্ণাঙ্গ পরিচালনা পরিষদর গঠন হবে এবং শ্রমিকদের মজুরি পরিশোধ করা হবে। এখন চা বাগানগুলোতে উৎপাদনের সময়। এখন যদি শ্রমিকেরা কর্মবিরতিতে যান, তাহলে চা বাগানের অনেক ক্ষতি হবে।