নড়াইলের তিনটি উপজেলার খাল-বিল থেকে শামুক এখন বিলুপ্তির পথে। প্রতিদিন নির্বিচারে শামুক নিধনের ফলে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষাকারী শামুকের বংশবিস্তার হুমকির মুখে পড়েছে। কোনো পরিচর্যা ছাড়াই শামুক পানিতে বংশবিস্তার করে এবং তা কিছু দিনের মধ্যে বড় হয়। এক সময় খাল-বিল ও জলাশয়ের পানিতে শামুক চোখে পড়লেও এখন আর তেমন একটা দেখা যায় না। ফসলী জমির উর্ব্বরতা বৃদ্ধিসহ জীববৈচিত্র্য রক্ষায় শামুকের ভূমিকা অপরিসীম বলে জানান মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তারা।
মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) সকালে দেখা যায়, লোহাগড়া উপজেলার জয়পুর রোড়ের পাশে মাছের ঘের মালিক ও মৎস্য চাষিরা মাছের খাবার হিসেবে শামুক ব্যবহার করছে। তবে বিলুপ্তির পথে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় অতি গুরুত্বপূর্ণ এ প্রাণিটি। কিছু মানুষ খাল-বিল থেকে অবাধে শামুক সংগ্রহ করে তা মৎস্য ঘের মালিক ও মৎস্য চাষিদের কাছে বিক্রি করে থাকে।
নড়াইল সদর উপজেলার আড়পাড়া গ্রামের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী জ্যোতি বিশ্বাস জানান, পড়ালেখার পাশাপাশি সে বর্ষার মৌসুমে প্রতিদিন সকালে বিল থেকে শামুক সংগ্রহ করে ২০০ থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি করে।
কালিয়া উপজেলার আমবাড়িয়া গ্রামের দিনমজুর কালু মিয়া শেখ জানান, সংসার চালানোর জন্য তিনি বিল-খালের পানি থেকে শামুক সংগ্রহ করে মৎস্য চাষিদের কাছে বিক্রি করে থাকেন। এতে তাঁর প্রতিদিন ৫০০ টাকা আয় হয়ে থাকে। যা দিয়ে তিনি সংসারের ব্যয় নির্বাহ করে থাকেন।
নড়াইল জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এইচ এম বদরুজ্জামান বলেন, ‘মাছের খাদ্য হিসেবে শামুকের ব্যবহার আমরা নিরুৎসাহিত করে থাকি। কারণ কাঁচা শামুক খাওয়ানোর ফলে মাছের শরীরে রোগ জীবাণু এবং গ্যাসের সৃষ্টি করে। পরবর্তীতে ওই মাছ খেলে মানুষের শরীরেও নানা রোগজীবাণু ছড়ায়। শামুক মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি করে। খাল-বিলে বেশি পরিমাণ শামুকের বিচরণ থাকার কারণে পানি ও মাটির উর্ব্বরতা বাড়ে এবং ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। শামুক মাছের খাবার হিসেবে ব্যবহার না করার জন্য ঘের মালিকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।’