বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক বলেছেন, শেখ হাসিনা এ দেশের মানুষের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ গ্রহণ করার জন্য রাজনীতিতে এসেছিল। সে শুধু বাংলাদেশের মানুষ ও জাতির বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নয়, আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধেও প্রতিশোধ নিয়েছে।
এভাবে বিভাজনের ও প্রতিশোধের রাজনীতি করে করে বাংলাদেশকে ধ্বংস করার যত আয়োজন সব করেছে শেখ হাসিনা। সে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হতে চান নাই, তিনি চেয়েছিলেন তিলকবাদী মুখ্যমন্ত্রী হতে।
শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) সকালে লক্ষ্মীপুর জেলা শহরের লিল্লাহ জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শাপলা চত্বরে আন্দোলন ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গণহত্যার বিচারের দাবি এবং নৈরাজ্যবাদের প্রতিবাদে এই গণ-সমাবেশের আয়োজন করে লক্ষ্মীপুর জেলা খেলাফত মজলিস।
মামুনুল হক বলেন, দেশের অর্থ পাচার করে বাংলাদেশকে একটি তলাবিহীন ঝুড়িতে পরিণত করেছেন শেখ হাসিনা। মেগা প্রকল্পের নামে মেগা দুর্নীতি করেছে আওয়ামী লীগ সরকার। এভাবেই বাংলাদেশকে অন্তসার শূন্য করে একটি পরনির্ভরশীল দেশ এবং জাতি হিসেবে অস্তিত্বকে বিপন্ন করাই ছিল শেখ হাসিনার রাজনীতি।
তিনি আরও বলেন, শুধু জুলাই-আগস্টে ১৬৩২ জন মানুষকে অন্যায়ভাবে হত্যা করা হয়েছে। আরও অসংখ্য মানুষ গুমের শিকার হয়েছে। তাদের লাশের পর্যন্ত পরিবার-পরিজনদের কাছে কোনো হদিস নাই।
তিনি বলেন, বিজয়ের আনন্দে আত্মহারা হয়ে থাকলে চলবে না, সবাইকে সজাগ এবং সচেতন থাকতে হবে। ষড়যন্ত্রের এবং চক্রান্তের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। যারা বিগত ১৫ বছর স্বৈরাচারের দ্বারা নিপিড়ীত, নিষ্পেষিত হয়েছি, যাদের দলের হাজার হাজার নেতাকর্মী গুম-খুনের শিকার হয়েছে। তাদের সবাইকে ঐক্য আরো বহুদিন ধরে রাখতে হবে। এখনই পারস্পরিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা, প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়ে সেই ফ্যাসিবাদকে আবার রাজনীতিতে পুনর্বাসিত হওয়ার সুযোগ দেওয়া যাবে না। এজন্য বিএনপি, জামায়াত ইসলামী বাংলাদেশ, ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, খেলাফত মজলিস, নেজামী ইসলাম, এমডিপি, এনপিপি, গণঅধিকার পরিষদসহ সবাই ঐক্য আরও দীর্ঘ মেয়াদিভাবে ধরে রাখতে হবে। মজবুতভাবে আঁকড়ে ধরে রাখতে হবে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে মামুনুল হক বলেন, সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করে প্রমাণ করেছে আওয়ামী লীগ এবং তাদের রাজনীতি ছিল সন্ত্রাস নির্ভর রাজনীতি। তাই শুধু ছাত্রলীগ নয়, আওয়ামী লীগকে বাংলাদেশের রাজিনীতি থেকে নিষিদ্ধের দাবি তোলেন তিনি।
জেলা খেলাফত মজলিসের সভাপতি মাওলানা লোকমান হোসেনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দিন আহমদ, মাওলানা আতাউল্লাহ আমিন, মাওলানা তোফাজ্জল হোসেন মিয়াজি, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুর রহমান হেলাল, মাওলানা মোহাম্মাদ ফয়সাল, মাওলানা আবু সাঈদ নোমান, মাওলানা ওযায়ের আমিন, আ.ন.ম নোমান সিদ্দিকী প্রমুখ।