রংপুরের মিঠাপুকুরে চোর সন্দেহে একদল গ্রামবাসীর গণপিটুনিতে আয়নাল ইসলাম (৩৫) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ঘটনাটি ঘটে। শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) বিকেলে যোগাযোগ করা হলে মিঠুপুকুর থানা পুলিশ এ তথ্য জানিয়েছে।
নিহত আয়নালের মা বুল্লি বেওয়া দাবি করেছেন, তার ছেলে চুরির সঙ্গে জড়িত নয়।
নিহত আয়নাল ইসলাম উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের ধলারপাড়া গ্রামের মৃত নুরু মিয়ার ছেলে। তার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, দুর্গাপুর ইউনিয়নের বড় মির্জাপুর গ্রামের একটি খামারে গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে গরু চুরির চেষ্টা করে দুষ্কৃতকারীরা। বাধা দেন আবদুস সাত্তারের স্ত্রী মনজুয়ারা বেগম (৬০)। এ কারণে তাকে ছুরিকাঘাত করা হয়। তার চিৎকারে গ্রামের লোকজন ঘটনাস্থলে এলে চোররা পালিয়ে যায়। পরে মনজুয়ারা বেগমকে উদ্ধার করে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এ খবর ছড়িয়ে পড়লে বৃদ্ধার স্বজনরাসহ একদল গ্রামবাসী ধলাপাড়া গ্রামে গভীর রাতে আয়নালের বাড়ি ঘিরে ফেলেন। তারা আয়নালকে বাড়ি থেকে বের করে গণপিটুনি দেন। এতে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন আয়নাল। হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
নিহত আয়নালের মা বুল্লি বেওয়া দাবি করেন, তার ছেলে চুরির সঙ্গে জড়িত নয়। তিনি বলেন, ‘অনেকগুলো মানুষ বাড়িত আসি (এসে) মোর ছইলটাক (ছেলেকে) ধরি নিয়া গেইলো (গেলো)। চুরি করার স্বাক্ষী-প্রমাণ নাই, তারপরও মোর ব্যাটাক (ছেলেকে) ধরি (ধরে) ওমরাগুল্যা (ওরা) ডাংডেয়া (পিটুনি দিয়ে) মারি (মেরে) ফেলাইলো (ফেললো)। মুই ইয়ার (আমি এর) বিচার চাও (চাই)।’
মিঠাপুকুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদৌস ওয়াহিদ জানান, একদল গ্রামবাসী তাকে (আয়নাল) ধরে নিয়ে গণপিটুনি দেন। গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। এ ঘটনায় কেউ থানায় এখন পর্যন্ত অভিযোগ দেননি।