শান মাসুদকে নিয়ে সমালোচনা হচ্ছিল তুমুল। একের পর এক হারে অধিনায়কত্ব নিয়েও উঠেছিল প্রশ্ন। সেসব উড়িয়ে দিতে বেছে নিলেন রাওয়ালপিন্ডির তৃতীয় দিন। টেস্টে দেখালেন টি-টোয়েন্টির ব্যাটিং, সেই সঙ্গে দলকে নোঙ্গর করলেন জয়ের বন্দরে। একই সঙ্গে মাতলেন সিরিজ জয়ের আনন্দে। রাওয়ালপিন্ডি টেস্টে ইংল্যান্ডকে ৯ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারিয়ে তিন ম্যাচের সিরিজ ২-১ ব্যবধানে হাত করল পাকিস্তান।
প্রথম টেস্টে বাজেভাবে হারের পর সমালোচনা হচ্ছিল তুমুল। সব যেন এক ফুৎকারে উড়িয়ে দিলো শান মাসুদের দল। মুলতানেই দ্বিতীয় টেস্টে জয়ের পর রাওয়ালপিন্ডিতে আরও একবার থামিয়ে দিলো ইংলিশদের বাজবল। দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তনে অর্জন করে নিল স্মরণীয় এক সিরিজ জয়। ২০২১ সালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারানোর পর আবার দেশের মাঠে সিরিজ জয়ের স্বাদ পেল তারা।
পাকিস্তানের এই জয়ের নায়ক নোমান আলি ও সাজিদ খান। এই দুজনের সামনে পড়ে স্রেফ গুঁড়িয়ে গেছে বেন স্টোকসেদের ব্যাটিং। দুজনের ঘূর্ণিতে ৪৬ রানের মধ্যে ৭ উইকেট হারিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ১১২ রানেই গুটিয়ে যায় ইংল্যান্ড। পাকিস্তানের লক্ষ্য দাঁড়ায় ৩৬ রান। ৩.১ ওভারেই সেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় তারা। ৬ বলে ২৩ রানের ছোট্ট ঝড়ে কাজ শেষ করেন শান মাসুদ।
এর আগে নোমান ও সাজিদ মিলেই ধ্বসিয়ে দেন ইংল্যান্ডের ইনিংস। দুই প্রান্ত থেকে টানা বোলিং করে নোমান নিয়েছেন ৬ উইকেট। ম্যাচে তার শিকার ৯ উইকেট। প্রথম ইনিংসে ৬ উইকেট নেওয়া সাজিদ দ্বিতীয় ইনিংসে নিয়েছেন ৪ উইকেট। ম্যাচ ১০ উইকেট তার টেস্ট ক্যারিয়ারে দ্বিতীয়বার। দ্বিতীয় দিনে ব্যাট হাতেও নোমান ৪৫ ও সাজিদ অপরাজিত ৪৮ রানে বড় ভূমিকা রাখেন।
৩ উইকেটে ২৪ রান নিয়ে তৃতীয় দিন শুরু করে ইংল্যান্ড। নেমেই দুই পাকিস্তানি স্পিনারের তোপের মুখে পড়েন জো রুট ও হ্যারি ব্রুক। ব্রুককে ২৬ রানে ফিরিয়ে ৪৬ রানের জুট ভাঙেন নোমান। এরপর ইংল্যান্ডের ব্যাটিংও ভেঙে পড়ে দ্রুতই।
নোমানের বল দৃষ্টিকটুভাবে ছেড়ে দিয়ে এলবিডব্লিউ হন বেন স্টোকস। জেমি স্মিথও বোল্ড হন ক্রিজে ছেড়ে বেরিয়ে। লোয়ার অর্ডারে কেউ সেভাবে প্রতিরোধ গড়তে পারেননি। একপ্রান্ত আগলে জো রুট করেন ৩৩। এরপর দ্রুতই বিদায় নেন রেহান আহমেদ ও জ্যাক লিচ।
ম্যাচের সেরা খেলোয়াড় হয়েছেন দুর্দান্ত সেঞ্চুরি করা সৌদ শাকিল। ১৯ উইকেটের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ রান করে সিরিজের সেরা সাজিদ। পাকিস্তান এরপর তিন ম্যাচের ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে যাবে অস্ট্রেলিয়ায়। সিরিজ শুরু ৪ নভেম্বর।
সংক্ষিপ্ত স্কোর: ইংল্যান্ড: ১ম ইনিংস ২৬৭ ও ২য় ইনিংস ১১২ পাকিস্তান: ১ম ইনিংস ৩৪৪ ও ২য় ইনিংস ৩৭/১ ফল: পাকিস্তান ৯ উইকেটে জয়ী। সিরিজ: তিন ম্যাচ সিরিজে পাকিস্তান ২-১ ব্যবধানে জয়ী।