আকারে ছোট, গোলাকার ও টকটকে হলদে বর্ণের আনারস জলডুগি। খেতেও ভারী মিষ্টি। এই আনারসের ফলন হয় সবচেয়ে বেশি মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে। বিক্রেতারা সেখান থেকে কিনে এনে হবিগঞ্জ সদর উপজেলার লস্করপুর রেলগেটের কাছের মহাসড়কে বিক্রি করেন এই ফল। এই সড়কে চলাচলকারী বিভিন্ন গন্তব্যের যাত্রী ও পরিবহন চালকদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে এই আনারস। বিক্রেতাদের কাছ থেকে কিনে পরিবারের জন্য ফলটি নিয়ে যান ক্রেতারা।
লস্করপুর রেলগেটের কাছের বনজদ্রব্য পরীক্ষা ফাঁড়ির সামনে মহাসড়কের পাশে ২০১৮ সাল থেকে আনারস বিক্রি করছেন মো. জলফু মিয়া ও তার ছেলে মো. হেলাল মিয়া। সকাল হলে তারা আনারস নিয়ে বসেন। রাত ১২টা পর্যন্ত চলে ফলটির বেচাকেনা। মহাসড়কে চলালচকারী যাত্রী ও চালকরা আনারস কিনতে আসেন তাদের কাছে। অনেকে দোকানে বসেও আনারস খান।
আনারসের ক্রেতা সুজন মিয়া বলেন, ‘প্রাইভেটকার দিয়ে যাওয়ার পথে মহাসড়কের পাশে আনারসের দোকানটি দেখতে পাই। গাড়ি থামিয়ে দোকানদারের কাছ থেকে আনারস কিনি। দোকানদার কেটে দেওয়ায় গাড়ির ভেতর বসিয়ে একটি আনারস খেয়েছি। ফলটি খেতে খুবই মজা। দোকানদার জানিয়েছেন, এটি জলডুগি আনারস। খেতে ভালো হওয়ায় দোকানদারের কাছ থেকে কিনে কিছু আনারস পরিবারের জন্য নিয়ে যাচ্ছি।’
স্থানীয় বাসিন্দা সোহেল মিয়া বলেন, ‘এখানে বারোমাস রসে ভরা টসটসে আনারস পাওয়া যায়। মাঝে মধ্যে আনারস খাওয়ার জন্য আসি।’
আনারস বিক্রেতা মো. জলফু মিয়া বলেন, ‘শুরুতে শ্রীমঙ্গল ও মুছাই থেকে কিছু আনারস এনে মহাসড়কের পাশে বসে বিক্রি করি। সাড়া পেয়ে আনারস বিক্রি অব্যাহত রেখেছি। বারোমাস বিলাতি ও জলডুগি আনারস বিক্রি হচ্ছে। সাপ্তাহে দুই থেকে তিনদিন ভোরে শ্রীমঙ্গল থেকে আনারস কিনে নিয়ে আসি। দৈনিক ৭ থেকে ৮ হাজার টাকার আনারস বিক্রি হলে ৯০০ থেকে ১২০০ টাকা লাভ হয়। আনারসের পাশাপাশি মাঝে মধ্যে লেবু ও পেঁপে বিক্রি করছি।’
হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালের ডা. মিঠুন রায় বলেন, ‘আনারসে ভিটামিন সি, নানা খনিজ পুষ্টি উপাদান যেমন- পটাশিয়াম, কপার, ম্যাঙ্গানিজ, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, বিটা-ক্যারোটিন, থায়ামিন, ফোলেট, এমনকি ফাইবার এবং ব্রোমেলিন থাকে। এই ফলটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, হজম শক্তি বাড়ায়, হাড় শক্ত করে, প্রদাহ জনিত সমস্যা দূর করে। এছাড়াও ঠান্ডা এবং কাশি কমাতে কাজে আসে। গবেষণায় বলছে, অতিরিক্ত ওজন কমাতেও আনারস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।’