বরিশাল নগরীতে প্রতিবছরের মতো এবারো উপমহাদেশের সর্ববৃহৎ শ্মশান দীপাবলী উদযাপিত হয়েছে। বুধবার (৩০ অক্টোবর) রাতে নগরীর কাউনিয়া মহাশ্মশানে এই উৎসবের আয়োজন করা হয়। এতে হাজারো হিন্দু ধর্মবলম্বী অংশগ্রহণ করেন। আগতদের নিরাপত্তায় জেলা প্রশাসন ও উৎসব আয়োজক কমিটির পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছিল নানা ব্যবস্থা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বরিশাল নগরীর কাউনিয়া এলাকায় ২০০ বছর আগে ৫ একরের বেশি জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত হয় মহাশ্মশান। এই শ্মশানে সমাধি রয়েছে প্রায় ৭০ হাজার। ১৯২৭ সাল থেকে এই শ্মশানে উপমহাদেশের সর্ববৃহৎ দীপাবলি উৎসব পালিত হয়ে আসছে। প্রয়াতদের স্বজন যারা বরিশালসহ সারাদেশে তথা বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে অবস্থান করছেন তারা সমাধির পাশে এসে নিজেদের আত্মীয়-স্বজনদের আত্মার শান্তির কামনায় প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করে প্রার্থনা করেন। এখানে গীতা পাঠ করে প্রার্থনা করার সময় অনেকই প্রয়াত স্বজনদের জন্য কান্নায় ভেঙে পড়েন। বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষের পাশাপাশি শিশুরাও আসেন মারা যাওয়া স্বজনদের জন্য প্রার্থনা করতে।
এলাকাবাসী জানান, সন্ধ্যার আগেই হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা আসেন শ্মশানে। প্রদীপ প্রজ্বলনের মধ্যদিয়ে শুরু হয় দিপাবলী উৎসব। প্রয়াত স্বজনদের সমাধি সাজানো হয় পছন্দের খাবারসহ নানা উপাচারে। তাদের আত্মার শান্তি কামনায় ধর্মীয় রীতি অনুয়ায়ী চলে প্রার্থনা। আগতদের অনেকেই স্বজনদের সমাধিতে মোমবাতি, প্রদীপ ও ধূপ কাঠি প্রজ্বালন করেন।
শ্মশানে আসা শুভ রায় বলেন, ‘বাবার সমাধিতে প্রদীপ জ্বালিয়ে তাকে স্মরণ করতে এসেছি। তিনি মিষ্টি খুব পছন্দ করতেন, তাই সমাধিতে নানা ধরনের মিষ্টি সাজিয়ে তাকে উৎসর্গ করেছি।’
শ্মশান দীপাবলী ও কালীপূজা উদযাপন পরিষদের সদস্য সচিব বিজয় ভক্ত বলেন, ‘৫ একরের বেশি জায়গাজুড়ে স্থাপিত বরিশালের কাউনিয়ার ঐতিহ্যবাহী শ্মশানটি দেশের অন্যতম বৃহৎ মহাশ্মশান। শুধু দেশেরই নয়, এটি দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় ও প্রাচীনতম মহাশ্মশান। এখানে উপমহাদেশের সর্ববৃহৎ শ্মশান দীপাবলী উদযাপিত হয়। উৎসবে আগতদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিতে পুলিশ, র্যাব, সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবকরা কাজ করছেন।’