কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার সেন্টমার্টিন দ্বীপে পর্যটক সীমিতকরণ ও রাত্রিযাপন নিষিদ্ধের প্রতিবাদে গণমিছিল হয়েছে। বুধবার (৩০ অক্টোবর) দুপুরে দ্বীপজুড়ে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
দ্বীপের বাসিন্দা হাবিবুর রহমান খান বলেন, ‘সরকার সেন্টমার্টিনে পর্যটক সীমিতকরণ এবং রাত্রিযাপনে নিষিদ্ধের যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা পরিবর্তন করতে হবে। যদি সিদ্ধান্ত পরিবর্তন না করা হয়, তাহলে কঠোর আন্দোলনের ডাক দিতে বাধ্য হবো।’
তিনি আরও বলেন, ‘দ্বীপের ৮০ শতাংশ মানুষ পর্যটন ব্যবসার ওপর নির্ভরশীল। আমাদের পরিবারের আয়-রোজগার বন্ধ হয়ে গেলে আমাদের পড়ালেখাও বন্ধ হয়ে যাবে। এতে সমাজে অসামাজিক কার্যকলাপ বেড়ে যেতে পারে।’
ব্যবসায়ী মাহবুব উল্লাহ বলেন, ‘দ্বীপের পরিবেশ রক্ষার নামে দ্বীপের পর্যটক, ব্যবসায়ীসহ সাধারণ মানুষ বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। হোটেল-রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ীরা লাখ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছেন। সরকার যদি দ্বীপে পর্যটক আসা সীমিতকরণ ও রাত্রিযাপন বন্ধ করে, এতে ব্যবসায়ীরা বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।’
অ্যাডভোকেট এম কেফায়েত উল্লাহ খান বলেন, ‘এক সময়ে সেন্টমার্টিন দ্বীপের মানুষজন অধিকাংশ ফিশিং ধরার উপর নির্ভর করলেও বর্তমানে ৯০ শতাংশের বেশি পর্যটন শিল্পের উপর নির্ভরশীল। দ্বীপের শিক্ষা ব্যবস্থা, চিকিৎসা, খাদ্য-বস্ত্র সবকিছুই পর্যটন ব্যবসার উপর নির্ভর করে। হঠাৎ করে দ্বীপের মানুষদের জেলে পেশায় ফিরিয়ে নেওয়া, পর্যটন শিল্প সীমিতকরণ করে বন্ধ করে দেওয়া; যা পুরো দ্বীপজুড়ে দুর্দশা নেমে আসবে। বন্ধ হয়ে যাবে দ্বীপটির শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা। ব্যাহত হবে চিকিৎসা সেবা। পুরো দ্বীপজুড়ে অভাব-অনাটন নেমে আসলে দ্বীপের লোকজন অভাবের দায়ে আবারও পরিবেশের ক্ষয়ক্ষতির করার দিকে ধাবিত হবে। শামুক ঝিনুক নুড়ি পাথর প্রবাল ইত্যাদি উত্তোলন করে দ্বীপের পরিবেশ হুমকির দিকে ঠেলে দেবে।’
গত ২২ অক্টোবর সন্ধ্যায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমির মিলনায়তনে বিফ্রিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার উপ প্রেস সচিব অপূর্ব জাহাঙ্গীর বলেন, উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সেন্টমার্টিনে নভেম্বর মাসে পর্যটক যেতে পারবে, তবে রাত্রিযাপন করতে পারবে না। ডিসেম্বর-জানুয়ারি মাসে সর্বোচ্চ দুই হাজার পর্যটক রাত্রিযাপন করতে পারবে। ফেব্রুয়ারিতে সেন্টমার্টিনে পর্যটন পুরোপুরি বন্ধ থাকবে। তখন সেন্টমার্টিন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হবে।