খেলাধুলা

দলের বেহাল দশা, সাকিবের শরণাপন্ন বিসিবি

ঘরের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে নাজেহাল অবস্থা টেস্ট দলের। ঢাকায় বড় ব্যবধানে হারের পর চট্টগ্রামেও বড় পরাজয়ের মুখে দাঁড়িয়ে স্বাগতিক শিবির। দলের এমন বেহাল দশা বিবেচানয় এনে সাকিব আল হাসানকে খেলাতে চায় বাংলাদেশ ক্রিকেট (বোর্ড)। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে পরিকল্পনাও।

বুধবার বিসিবির ১৫তম বোর্ড মিটিংয়ে এমন সিদ্ধান্ত নেয় পরিচালনা পর্ষদ। নিয়ে রাখা হয়েছে সরকারের ওপর মহলের সবুজ সংকেত। অর্থ্যাৎ সাকিবকে খেলাতে কোনো আপত্তি নেই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের।

রাইজিংবিডিকে বিসিবির পরিচালনা পর্ষদের একজন সদস্য বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। মুঠোফোনে তিনি বলেন, ‘সাকিবের মতো খেলোয়াড় এখন প্রয়োজন। টিমের যে অবস্থা, সাকিবকে বলা হয়েছে। সে খেলবে কী খেলবে না এগুলো জানতে চাওয়া হয়েছে। সে জানাচ্ছে। সাকিবকে এখন আমাদের প্রয়োজন।’

সাকিব তার সিদ্ধান্ত জানালে এরপর সিদ্ধান্ত নেবে বোর্ড, ‘সাকিবের পরিকল্পনা জানাও আমাদের প্রয়োজন আছে। ও খেলবে কী খেলবে না আমাদেরতো জানতে হবে তার খেলা নিয়ে সরকারের উচ্চ মহলের ক্লিয়ারেন্স নেওয়া হয়েছে। ও যদি খেলতে পারে আমাদের কোনো অসুবিধা নেই।’

যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজিব ভুঁইয়ার ব্যক্তিগত প্রেস সচিব মাহফুজ আলম রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘সাকিবকে খেলাতে সরকারের কোনো আপত্তি নেই। বিসিবি-সাকিব যদি চায় সে খেলতে পারে। এর আগেও তার খেলা নিয়ে সরকারের কোনো আপত্তি ছিল না।’

ভারত সফরে কানপুর টেস্টের আগে সাকিব দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে খেলে টেস্টকে বিদায় জানাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত নিরাপত্তা ইস্যুতে আর আসতে পারেনি। সরকারের উচ্ছ পর্যায় থেকে তাকে না আসার জন্য বলা হয়। তবে আপাতত দেশের মাটিতে খেলা না থাকায় সাকিবকে বিদেশে খেলাতে আপত্তি নেই কারও।

গতকাল বিসিবি প্রেসিডেন্ট বোর্ড মিটিংয়ের আগে অবশ্য এমন ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। জানিয়েছেন সামনের আফগানিস্তান সিরিজে অ্যাভেইলেবল। এছাড়া তাকে ফেরাতে নিজের সর্বোচ্চ চেষ্টা করেন বলেও জানান ফারুক।

বিসিবি প্রেসিডেন্ট বলেছেন, ‘আপনি যেটা বললেন যে শেষ টেস্ট খেলতে ফিরতে পারেনি… একেবারেই আমরা কোনোভাবে জড়িত নই এই ব্যাপারটায়। এটা হলো আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সরকার ও সাকিব আল হাসানের (ব্যাপার)। আমি ব্যক্তিগতভাবে আপনাদের সামনে যত কথাই বলি, আমি আমার সর্বোচ্চটা দিয়ে চেষ্টা করেছি যাতে সাকিব আল হাসান দেশ থেকে অবসরে যেতে পারে। আমার চেষ্টা আমি করেছি।’

সাকিব যদি চায় আফগানিস্তান সিরিজে তার থাকা এক প্রকার নিশ্চিত। এরপর দল উড়াল দেবে ওয়েস্ট ইন্ডিজে। ক্যারিবীয়ানদের বিপক্ষে দুই টেস্ট ও তিনটি করে ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টি ম্যাচের সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ। এই সিরিজের পর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি পর্যন্ত আর কোনো খেলা নেই।

‘এখন আমাদের যেখানে সমস্যা সেদিকে নজর দিতে হবে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজেও সাকিবকে চায় বোর্ড। টেস্টেও দেখা যেতে পারে যদি সাকিব রাজি থাকে’-বলছিলেন বিসিবির এই পরিচালক।

প্রোটিয়াদের বিপক্ষে খেলার জন্য সাকিব গত ১৭ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্র থেকে রওয়ানা দিয়েছিলেন। দুবাই ট্রানজিটে তাকে জানানো হয় অপেক্ষা করার জন্য। শেষ পর্যন্ত তাকে নিরুৎসাহিত করা হয় না আসার জন্য। সাকিব আবার দুবাই থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ফেরত যান পরিবারের কাছে। এখন সাকিব কি জানায় সেটাই দেখার।