খেলাধুলা

বিপিএলকে ‘গ্লোবাল টুর্নামেন্ট’ করতে যে পথে হাঁটছে বিসিবি

একেকবার একেক ফ্র্যাঞ্চাইজি। নেই কোনো ধারাবাহিকতা। সময়-সূচিও পাল্টে যায় বছর বছর। মাঠের ক্রিকেটেও থাকে না কোনো ছন্দ। আলোচনা থাকে মাঠের বাইরের নানা ইস্যু নিয়ে। এতক্ষণে বোঝার কথা; এমন কিছু হয়ে থাকে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগকে (বিপিএল) ঘিরে। 

বিপিএলের ১১তম আসর মাঠে গড়াতে প্রায় দু’মাস বাকি। ইতোমধ্যে এই টুর্নামেন্টকে আকর্ষণীয় করতে কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। বিপিএল গর্ভনিং কাউন্সিলের দায়িত্বে আছেন খোদ বিসিবি প্রেসিডেন্ট ফারুক আহমেদ।  

এবার বোর্ডের চাওয়া বিপিএলকে একটি গ্লোবাল টুর্নামেন্ট হিসেবে রূপ দেওয়া। শুধু তাই নয়, সারাদেশে বিপিএলকে ছড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনাও রয়েছে বোর্ডের। এই বিষয়গুলোতে জড়িত আছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুসসহ যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়াও। এ ছাড়া জুলাই গণঅভ্যুথানের নানা বিষয় ফুটিয়ে তোলা হবে বিপিএলের মাধ্যমে। 

প্রায় প্রতিদিনি বিপিএল নিয়ে কোনো না কোনো মিটিং হচ্ছে। সোমবার (৪ নভেম্বর) এই বিষয়ে সংবাদ মাধ্যমে কথা বলেছেন বিপিএলের সদস্য সচিব নাজমুল আবেদীন ফাহিম। বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়া নিয়ে ফাহিম বলেন, ‘এই উপলক্ষটাকে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দেওয়া নিয়ে অনেক কাজ হচ্ছে। সামাজিক বিভিন্ন ব্যাপারে বিপিএলকে ব্যবহার করা হবে।’

‘আমরা শুধু খেলার মাঠে বিপিএলকে দেখব না। সারা দেশে বিপিএল ছড়িয়ে পড়বে কোন না কোনভাবে। রিসেন্টলি যে আন্দোলন হয়েছে, সেখানে যে ঘটনাগুলো ঘটেছে এবং সেটার যে স্পিরিট, সেটাও আমরা দেখতে পাব বিপিএলের বিভিন্ন লেভেলে, বিভিন্ন সময়’ -আরও যোগ করেন ফাহিম। 

প্রধান উপদেষ্টাকে ইতোমধ্যে বিপিএলে আমন্ত্রণ করা হয়েছে। আনা হতে পারে কোনো তারকা ফুটবলার কিংবা হলিউডের কোনো অভিনেতা বা অভিনেত্রীকে। যাতে করে তাদের মাধ্যমে বিশ্বমঞ্চে বিপিএল ছড়িয়ে পড়ে। 

‘কিভাবে এটাকে আন্তর্জাতিক মানের টুর্নামেন্টে পরিণত করা যায়, কিভাবে এটাকে ব্র্যান্ড হিসেবে তৈরি করা যায়, কিভাবে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দেওয়া যায়…বিশ্ব যেন দেখে বাংলাদেশের তরুণরা কেমন, বাংলাদেশের সমাজটা কেমন, বাংলাদেশের খাওয়া কেমন… এই জিনিসটা যেন সবাই দেখে। শুধু বিপিএল নয়, বাংলাদেশও একটা ব্র্যান্ড হিসেবে পরিচিতি পাবে এই বিপিএলের পর।’

‘চাইলেই এখন গ্লোবালি সব টিভিতে চলে যেতে পারব না। তবে এটা নিশ্চয়ই আপনারা স্বীকার করবেন, প্রফেসর ইউনুস, আমাদের প্রধান উপদেষ্টা যদি মাঠে আসেন, একটা বক্তব্য দেন, বিদেশ থেকে দারুণ নামকরা একজন ফুটবলার বা হলিউড থেকে একজন অভিনেতা বা অভিনেত্রী এখানে এসে সংযুক্ত হন, এটা নিশ্চয়ই মিডিয়াতে আসবে। সারা পৃথিবীর মিডিয়াতে আসবে। আমাদেরও সে চেষ্টাটা থাকবে। আমার ধারনা এর আগে যা হয়েছে তার চেয়ে অনেক বেশি এবার করার সম্ভাবনা আছে’ -এভাবে বলেছেন ফাহিম। 

বিপিএলকে গ্লোবাল টুর্নামেন্ট হিসেবে রূপ দেওয়ার চিন্তা থাকলেও দেশের সবচেয়ে বড় দুই তারকা সাকিব আল হাসান ও মাশরাফি বিন মুর্তজার খেলা নিয়ে আছে শঙ্কা। তাদের ছাড়া গ্লোবাল টুর্নামেন্ট হিসেবে বিপিএলকে রূপ দেয়ার যে চেষ্টা চলছে সেটা প্রশ্নবিদ্ধ হবে কী না এমন প্রশ্নও ছিল ফাহিমের কাছে। 

তার উত্তর, ‘আমরা এতদিন ধরে সুপারস্টার তৈরি করতে পারিনি এটাও আমাদের একটা ব্যর্থতা। আমি তো আশা করব এখান থেকে নতুন সুপারস্টার উঠে আসবে। ওরা থাকলে ভালো হতো, অবশ্যই তাদের ব্র্যান্ড ভ্যালু আছে। যদি ওরা থাকে তাহলে একরকম, না থাকলে আরেকরকম।’ 

চলতি বছরের ২৯ ডিসেম্বর শুরু হবে ফ্র্যাঞ্চাইভিত্তিক এই টুর্নামেন্ট। প্রায় দেড় মাসব্যাপী এই টুর্নামেন্ট শেষ হবে পরের বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি। এবারের বিপিএলের ৭টি দল হলো— ঢাকা ক্যাপিটালস, চিটাগং কিংস, দুর্বার রাজশাহী, ফরচুন বরিশাল, খুলনা টাইগার্স, রংপুর রাইডার্স ও সিলেট স্ট্রাইকার্স।