ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে বিএনপির দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ মামলার এজাহারভুক্ত আসামি রাজু আহমেদকে গ্রেপ্তারের পর ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে উপজেলা চত্বর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা করা হয়।
কালীগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) মানিক চন্দ্র গাইন বলেন, ‘মামলার বাদী বলেছে, রাজু আহমেদের নাম ভুল করে দেওয়া হয়েছে। এজন্য তাকে ছেড়ে দিয়েছি।’
বাদী জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘তার (রাজু আহমেদ) নাম জেনে-শুনেই মামলায় দেওয়া হয়েছে। পুলিশ যা বলছে, সেটি বানোয়াট ও মিথ্যা।’
গ্রেপ্তারের পর ছেড়ে দেওয়া রাজু আহমেদ উপজেলার আড়পাড়া এলাকার কওসার মহুরীর ছেলে। তিনি মামলার ৭৩ নম্বর আসামি।
কালীগঞ্জ পৌর বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক জবেদ আলী জানান, গত ৪ আগস্ট আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে কালীগঞ্জ শহরের থানা রোডস্থ বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। এ ঘটনায় পৌর যুবদলের সদস্য সচিব জাহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে ৯৪ জনের নাম উল্লেখ ও নাম না জানা ৪০০ জনকে আসামি করে মামলা করেন।
সেই মামলার ৭৩ নম্বর আসামি রাজু আহমেদ। আজ দুপুরে কালীগঞ্জ থানার এসআই চয়নের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল রাজু আহমেদকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যান। এরপর ২০-২৫ জন যুবক থানায় যান রাজু আহমেদকে ছাড়িয়ে নিতে। পরে পুলিশ রাজু আহমেদকে ছেড়ে দেয়।
মামলার বাদী জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘রাজু আহমেদ গত ৫ আগস্টের আগে পৌর যুবলীগের আহ্বায়ক শফিকুজ্জামান রাসেলের সঙ্গে রাজনীতি করতেন। তিনি যুবলীগের রাজনীতি করতেন। তিনি বিএনপির দলীয় অফিস পোড়ানোর সঙ্গে জড়িত। তার নাম জেনে-শুনেই মামলায় দেওয়া হয়েছে। পুলিশ যা বলছে সেটি বানোয়াট ও মিথ্যা।’
ঝিনাইদহ আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘এজাহারভুক্ত কোনো আসামিকে গ্রেপ্তারের পর পুলিশ ছেড়ে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে না। জিআর মামলা রেকর্ড হওয়ার পর এটির বাদী হয়ে যায় রাষ্ট্র আর অভিযোগকারী হয়ে যান স্বাক্ষী মাত্র। একমাত্র আদালত আসামিকে জামিনের মাধ্যমে ছাড়তে পারেন।’
কালীগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) মানিক চন্দ্র গাইন বলেন, ‘মামলার বাদী বলেছে, রাজু আহমেদের নাম ভুল করে দেওয়া হয়েছে। এজন্য তাকে ছেড়ে দিয়েছি। কোনো টাকা পয়সার লেনদেন হয়নি।’
আসামি গ্রেপ্তারের পর ছেড়ে দিতে পারেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি কোনো উত্তর দিতে পারেননি।
এ বিষয়ে জানতে ঝিনাইদহের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মঞ্জুর মোর্শেদকে কয়েকবার ফোন করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি। যে কারণে তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।