সারা বাংলা

স্বপ্ন নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসা রাচি ১ মাসেই ফিরলেন লাশ হয়ে

বেপরোয়া গতির অটোরিকশার ধাক্কায় নিহত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) মার্কেটিং বিভাগের ৫৩ ব্যাচের মেধাবী শিক্ষার্থী আফসানা করিম রাচির গ্রামের বাড়ি শেরপুরের নকলায় মাতম চলছে। মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলাভবনের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। আজ বুধবার (২০ নভেম্বর) দুপুর ২টায় ঢাকার রাচির প্রথম জানাজা হয়। পরে লাশ শেরপুরে আনা হয়।

শেরপুরে চন্দ্রকোনা ইউনিয়নের চকবড়ইগাছি গ্রামের বাড়িতে দ্বিতীয় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাচির চাচা আহমেদ করিম তপন। রাচি নকলা উপজেলার অবসরপ্রাপ্ত সড়ক ও জনপথ বিভাগের ইঞ্জিনিয়ার রেজাউল করিম বাদলের মেয়ে। রাচি পরিবারের সকলের সঙ্গে ঢাকার ধানমন্ডিতে নিজস্ব বাসায় থাকতেন।

রাচি তার বিশ্ববিদ্যালয়ে রাস্তা অতিক্রম করার সময় দ্রুতগামী ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা তাকে ধাক্কা দিলে পাশে থাকা গাছের সঙ্গে মাথায় আঘাত পান। প্রথমে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব চিকিৎসা কেন্দ্রে নেওয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ব্যাপারে রাচির চাচা আহমেদ করিম তপন বলেন, তার ভাই রেজাউল করিম বাদল ও ভাবি ইসমত আরা বেগম কবিতার ঘরে ৬ সন্তানের মধ্যে রাচি সবার ছোট। ছোটবেলা থেকে রাচি মেধাবী ছিলেন। ঢাকার ভিকারুননিসা নুন স্কুল এন্ড কলেজ থেকে এসএসসি এবং এইচএসসিতে জিপিএ ৫ নিয়ে পাস করার পরে ভর্তি হন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। পড়ালেখা ছাড়া কিছুই বুঝতেন না। কম কথা বলতেন। অটোরিকশা মেধাবী সন্তানটাকে কেড়ে নিলো।

চকবড়ইগাছি এলাকার স্কুল শিক্ষক রহুল আমিন বলেন, মেয়েটা এক মাস আগে অনেক স্বপ্ন নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিলেন। তাঁর এ মৃত্যুর খবর কষ্টের। এ রকম মৃত্যু কারও কাম্য নয়। সরকারের প্রতি আহ্বান, সড়কে এ ধরনের মৃত্যু রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করার।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োকেমিস্ট্রি বিভাগের শিক্ষার্থী জালাল সাকিব বলেন, ‘‘রাচির মৃত্যু আমাদের আহত করেছে। মেয়েটা ক্লাস শুরু করেছেন মাত্র ১ মাস হলো। তাকে ঘিরে কত স্বপ্ন, কত আশা ছিল তার পরিবারের। সব শেষ। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে রাচি মারা গেল।’’

তিনি আরও বলেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ক্যাম্পাসের ভিতরে যাতায়াতের শৃঙ্খলা আরও নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখবে এটাই আমাদের চাওয়া। প্রশাসন এ দায় এড়াতে পারে না। এমন মৃত্যু আমরা চাই না।’’