গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এসময় ভাঙচুর করা হয়েছে আটটি মোটরসাইকেল। কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণের আওয়াজ শোনা গেছে বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
বুধবার (২০ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৭টার দিকে উপজেলা পরিষদের গেটে দুই দলের নেতাকর্মীরা জড়ো হলে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনাটি ঘটে বলে জানান পলাশবাড়ী থানার ওসি জুলফিকার আলী ভুট্টো।
পলাশবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুল ইসলাম বলেন, “মূলত মহদীপুর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান নির্বাচিত করা এবং চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ইউপি সদস্যদের অনাস্থা এই দুই বিষয়কে কেন্দ্র করে সন্ধ্যায় বিএনপি এবং জামায়াত কর্মীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া এবং সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। উভয়পক্ষের কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে শুনেছি। ঘটনাস্থলে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা রয়েছেন। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।”
এলাকাবাসী জানান, মহদীপুর ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জামায়াতপন্থী রাহিদুল ইসলাম বাবুর বিরুদ্ধে পরিষদের সদস্যদের অনাস্থা প্রস্তাব এবং প্যানেল চেয়ারম্যান নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপি-জামায়াতের দুই পক্ষের নেতাকর্মীদের বিরোধ দেখা দেয়। আজ বিকেলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) মো. কামরুল হাসানের কার্যালয়ে অনাস্থা প্রস্তাবের বিষয়ে শুনানি হয়। শুনানিতে পরিষদের (সদস্য) মেম্বারদের মধ্যে কয়েকজন অনাস্থা প্রস্তাবের পক্ষে কথা বলেন। এ নিয়ে উপস্থিত নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা জড়িয়ে পড়ে।
পরে পরিষদের গেটে বিএনপি ও জামায়াত নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এসময় দুই দলের নেতাকর্মীরা একে অন্যকে লক্ষ্য করে ইট নিক্ষেপ করেন। তারা দোকানসহ কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেন। ককটেল বিস্ফোরণের আওয়াজ পাওয়া যায়। এ সময় উভয় দলের নেতাকর্মী, পথচারী ও ব্যবসায়ীসহ অন্তত ১০ জন আহত হন।
পলাশবাড়ী উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুস ছামাদ ও জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির মাওলানা মো. নজরুল ইসলাম লেবুর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাদের দুই জনেরই মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।
মোবাইল ফোনে গাইবান্ধা জেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক ও পলাশবাড়ী পৌর এলাকার বাসিন্দা রবিউল ইসলাম লিয়াকত বলেন, “সংঘর্ষের ঘটনায় আমাদের পাঁচ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। একটি অফিস ও নেতাকর্মীদের আটটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়েছে। আগুন দেওয়া হয় দুটি মোটরসাইকেলে। জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা পরিকল্পিতভাবে ধাওয়া ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটিয়েছে।”
ওসি জুলফিকার আলী ভুট্টো মোবাইল ফোনে বলেন, “এ ঘটনায় কেউ আহত হয়েছেন কিনা তা জানা যায়নি। রাত সোয়া ৯টা পর্যন্ত কোনো দলের পক্ষ থেকে কেউ অভিযোগ করেনি।”