লাইফস্টাইল

খারাপ বস স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর: গবেষণা

প্রায় প্রত্যেক চাকরিজীবীর একজন খারাপ বস, ম্যানেজার বা টিম লিডারের অধীনে কাজ করার বাজে অভিজ্ঞতা আছে। একজন খারাপ বস কখনো কাজের কৃতীত্ব তার কর্মীদের দেন না। নেতৃত্ব উন্নয়নের জন্য আমেরিকা বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ব্যায় করার পরেও প্রায় প্রতিটি কর্মক্ষেত্রে খারাপ বসের অধীনে কাজ করেন কর্মীরা।

একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ৫৬ শতাংশ আমেরিকান কর্মক্ষেত্রের কর্মীরা খারাপ বসের অধীনে কাজ করে। আমেরিকান সাইক্লোজিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের একটি জরিপ অনুযায়ী, ৭৫ শতাংশ আমেরিকান কর্মী কর্মক্ষেত্রে অতিরিক্ত চাপ অনুভব করেন শুধুমাত্র বসের জন্য।

গ্যালাপ এর একটি গবেষণায় দেখা গেছে, শুধুমাত্র বসের কারণে দুইজনের মধ্যে একজন চাকরি ছেড়ে চলে যান।  জাতীয় কর্মক্ষেত্র বিশেষজ্ঞ এবং লেখক লিন টেলর বলেছেন, ‘‘একজন খারাপ বস আপনার কর্মজীবনেই শুধু সমস্যা বৃদ্ধি করে না বরং আপনার ব্যক্তিগত জীবনেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলেন।’’

গবেষকেরা বলছেন, খারাপ বস আপনার শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। গবেষকদের পরামর্শ খারাপ বসকে মোকাবিলা করার জন্য কিছু কৌশল আয়ত্ব করা উচিত। 

স্বাস্থ্যঝুঁকি: খারাপ বসের অধীনে কাজ করার ফলে স্বাস্থ্য ঝুঁকি দীর্ঘস্থায়ী বিষণ্নতা, চাপ ও উদ্বেগ তৈরি হতে পারে। সুইডেনে ৩ হাজার ১২২ জন কর্মচারীর ওপর পরিচালিত একটি জরিপে দেখা গেছে, যারা খারাপ বসের অধীনে কাজ করেন তাদের স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাক, কার্ডিয়াক সমস্যার ঝুঁকি রয়েছে। এই ঝুঁকি ৬০ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে। 

কিছু গবেষণা ইঙ্গিত করে যে একজন খারাপ বসের অধীনে কাজ করার পরে যদি চাকরি ছেড়েও চলে যায়, তারপরেও ওই কর্মীর মানসিক চাপ কমাতে ২২ মাস সময় লেগে যেতে পারে। 

ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অফ এনভায়রনমেন্টাল রিসার্চ অ্যান্ড পাবলিক হেলথ-এ প্রকাশিত একটি সাম্প্রতিক সমীক্ষায় আরও প্রকাশ করা হয়েছে যে, ক্ষতিকারক কাজের পরিবেশ উচ্চ রক্তচাপ, উচ্চ কোলেস্টেরল এবং ডায়াবেটিস সহ কার্ডিওভাসকুলার রোগের ঝুঁকি বাড়ায়।

তারপরেও একজন কর্মীর জন্য চাকরি ছেড়ে দেওয়া ভীতিকর মনে হতে পারে। আর একজন খারাপ বসের অধীনে চাকরি করার প্রভাব ও বাস্তবতা আরও খারাপ হতে পারে। খারাপ প্রভাব এড়াতে নিজেকে মনে করিয়ে দিন যে এটি একটি অস্থায়ী পরিস্থিতি। কাজের বাইরে আপনার আনন্দের উৎসগুলো খুঁজে নিন। যোগব্যায়াম এবং ধ্যানের মতো মননশীলতা এবং শিথিলকরণ প্রক্রিয়া অনুশীলন করুন। পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমান এবং ব্যায়াম করুন। 

একই সঙ্গে আপনার কাজ সম্পর্কীত একটি শক্তিশালী নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার দিকে মনোযোগ দিন। এমন একজন প্রশিক্ষক বা পরামর্শদাতা খুঁজে নিন, যিনি আপনার জন্য একটি দুর্দান্ত উপায় খুঁজে পেতে সহায়তা করতে পারেন। 

 সূত্র: দ্য ফোর্বস