কিলিয়ান এমবাপ্পে রিয়াল মাদ্রিদে নাম লেখানোর পর ভক্ত সমর্থকদের উচ্ছ্বাসের কমতি ছিল না। সেই সঙ্গে প্রত্যাশার পারদও ছিল তুঙ্গে। তবে সময়ের দাবি মেটাতে পারলেন না এমবাপ্পে। একের পর এক ম্যাচে নিজের ছায়া হয়ে থেকেছেন। এবার চ্যাম্পিয়নস লিগের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে মিস করলেন পেনাল্টি। ১৫ বছর পর লিভারপুলের কাছে ২-০ গোলে পরাজয়ের স্বাদ পেল রিয়াল।
বুধবার (২৭ নভেম্বর) রাতে ঘরের মাঠ অ্যানফিল্ডে দ্বিতীয়ার্ধে লিভারপুলকে এগিয়ে নেন আলেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টার। এরপর পেনাল্টি মিস করে সমতায় ফেরার সুযোগ হারান এমবাপ্পে। মোহামেদ সালাহও একই ভুল করেন। শেষে বদলি নেমে লিভারপুলের জয় নিশ্চিত করেন কোডি হাকপো।
ঘরের মাঠে লিভারপুল কেমন ফুটবল উপহার দিয়েছে, সেটা পরিসংখ্যানের দিকে তাকালেই দেখা যায়। ৬২ শতাংশ সময় বল দখলে রেখে গোলের জন্য ১৭টি শট নিয়ে ৭টি লক্ষ্যে রাখে তারা। সেখানে রিয়ালের ৯ শটের কেবল ৩টি লক্ষ্যে রাখতে পারে।
ম্যাচের চতুর্থ মিনিটে প্রথম আক্রমণ করে লিভারপুল। দারউইন নুনেসের শট থিবো কোর্তোয়া ঠেকানোর পর গোললাইন থেকে ক্লিয়ার করেন রাউল আসেন্সি। ২৩তম মিনিটে রিয়ালকে রক্ষা করেন কোর্তোয়া। এরপর একের পর আক্রমণেও প্রথমার্ধে গোলের দেখা পায়নি কোনো দল।
দ্বিতীয়ার্ধেও একই ধারায় খেলা চলতে থাকে। আবারও লিভারপুলকে হতাশ করেন কোর্তোয়া। ৫১তম মিনিটে কনর ব্র্যাডলির হেড ফিরিয়ে দেন তিনি। এর ঠিক পরের মিনিটেই গোল হজম করতে হয়। ব্র্যাডলিকে বক্সের বাইরে পাস দিয়ে ভেতরে ঢুকে পড়েন অ্যালিস্টার। তিনি। ফিরতি পাস পেয়ে নিচু শটে জাল খুঁজে নেন আর্জেন্টাইন মিডফিল্ডার।
রিয়ালের সামনে গোল শোধের একদম সুবর্ণ সুযোগ এসে ধরা দিয়েছিল। কিন্তু সুযোগটা কাজে লাগাতে পারলেন না ফরাসি তারকা। ৫৯তম মিনিটে লুকাস ভাসকেসকে লিভারপুলের অ্যান্ডি রবার্টসন বক্সে ফাউল করলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। এমবাপ্পের দুর্বল স্পট-কিক ঝাঁপিয়ে ঠেকিয়ে দেন কুইভিন কেলেহার।
এমবাপ্পে পেনাল্টি মিস করার দশ মিনিট পর পেনাল্টি পায় লিভারপুলও। ৬৯তম মিনিটে সালাহকে ফেরল্যান্ড মেন্ডি বক্সে ফেলে দিলে পেনাল্টি পায় লিভারপুল। কিন্তু বাইরে মেরে ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ হারান মিশরীয় ফরোয়ার্ড।
এরপর বদলি হিসেবে কোডি হাকপোকে নামান লিভারপুল কোচ। আর্না স্লটের ট্রাম্পকার্ড একদম ঠিকঠাক কাজ করেছে। ৭৬তম মিনিটে ব্যবধান বাড়িয়ে দলের জয় নিশ্চিত করে ফেলেন হাকপো। রবার্টসনের ক্রসে বক্সে লাফিয়ে হেডে লক্ষ্যভেদ করেন ডাচ ফরোয়ার্ড।
বাকি সময়ে আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ করেও আর গোলের দেখা পায়নি কেউ। রিয়ালও লিখতে পারেনি আরেকটি প্রত্যাবর্তনের গল্প। তাতে দেড় যুগের বেশি সময় পর রিয়ালের বিপক্ষে জয় খরা কাটালো লিভারপুল। সবশেষে এই মাঠেই ২০০৯ সালে চ্যাম্পিয়নস লিগের শেষ ষোলোর ফিরতি লেগে ৪-০ গোলে জিতেছিল লিভারপুল।