সারা বাংলা

চাঁদপুরে চোর সন্দেহে যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে গণপিটুনির শিকার হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বাবু গাজী নামে এক যুবকের মৃত্যু হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। চোর অপবাদে তার ওপর ওই নির্যাতন চালানো হয়।

ঢাকায় একটি প্রাইভেট হাসপাতালে বুধবার (২৭ নভেম্বর) বিকেলে মৃত্যু হয় তার। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ফরিদগঞ্জ থানার ওসি শাহ আলম। 

এ ঘটনায় নিহতের স্বজনরা অভিযোগ করেছেন, জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে বাবুকে পিটিয়ে আহত করা হয় এবং পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। 

যদিও একাধিক সূত্র জানায়, গোবিন্দপুর দক্ষিণ ইউনিয়ন ও আশেপাশের এলাকায় বাবু গাজী একজন চিহ্নিত চোর হিসেবে পরিচিত। থানায় তার নামে ১৮টি মামলা চলমান রয়েছে। 

গত ৯ নভেম্বর বাবু গাজীকে এলাকাতে বেদম পিটুনি দেয় কয়েকজন। এতে তিনি মারাত্মক আহত হন। বিষয়টি গণপিটুনি হিসেবে ছড়ানো হয়। খবর পেয়ে ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশ বাবুকে উদ্ধার করে ফরিদগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখান থেকে তাকে ঢাকায় পাঠায় চিকিৎসক। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির পরে একটি প্রাইভেট হাসাপাতালে তিনি বুধবার (২৭ নভেম্বর) বিকেলে মারা যান। পরে বৃহস্পতিবার চাঁদপুরে ময়নাতদন্ত শেষে তাকে বাড়ির কবরস্থানে দাফন করা হয়।

এদিকে নিহত বাবু গাজীর মা শাহিদা (৫৫) জানান, ঘটনার দিন রাতে বেশ কিছু সংখ্যক লোকের সাথে তার বোন পাখির বাড়িতে জমিজমা নিয়ে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে ঝগড়া বাঁধে। সেখানে বাবুকে বেদম মারা হয়। মার খেয়ে বাবু নিজ বসত ঘরে আশ্রয় নেয়। সেখানেও লোকজন বসত ঘরের ভেতরে প্রবেশ করে বাবুকে পেটায়। পরে তাকে টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়া হয় বাইরে। এক পর্যায়ে, বাবু জ্ঞান হারিয়ে ফেললে হারুনের দোকানের অদূরে একটি গাছের সাথ বেঁধে রেখেও মারতে থাকে হামলাকারীরা। 

বাবুর স্বজনদের দাবি, ওইদিন বাবুকে বিনা অপরাধে মারা হয়েছে। হাছান (৫) ও হোসেন (১) নামে দুজন শিশু ছেলে সন্তান রয়েছে বাবু গাজীর। 

এ বিষয়ে চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মো. শাহ আলম জানান, বাবু গাজীর বিরুদ্ধে থানায় অন্তত ১৮টি মামলা রয়েছে বলে তথ্য পেলাম। তবে কেউ আইন হাতে তুলে নিবে তা মেনে নেয়া যায় না। তাকে বেদমভাবে মেরে আহত করার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে। তার পরিবার থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে অবশ্যই তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।