রিমার্ক এলএলসি ইউএসএর অ্যাফিলিয়েটেড প্রতিষ্ঠান রিমার্ক এইচবির মুকুটে যোগ হলো আরেকটি সোনালি পালক। সবচেয়ে দ্রুততম সময়ের মধ্যে সম্মানজনক গুড ম্যানুফ্যাকচারিং প্র্যাকটিস বা জিএমপি সার্টিফিকেট অর্জন করেছে রিমার্ক। এই সনদ অর্জন কসমেটিকস ও স্কিন কেয়ার সেক্টরে দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশকে নেতৃত্বের শীর্ষে পৌঁছে দেবে বলে আশা করা যাচ্ছে। একই দিনে যুক্তরাষ্ট্র ও ফিলিপাইনে কসমেটিকস ও স্কিনকেয়ার পণ্য রপ্তানি আদেশ প্রতিপালন শুরু করল রিমার্ক।
শনিবার (৩০ নভেম্বর) আনুষ্ঠানিকভাবে রপ্তানি আদেশের অনুমোদন দিয়েছেন রিমার্ক-হারল্যানের পরিচালক মেগাস্টার শাকিব খান। যিনি রিমার্ক-হারল্যানের ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ডেভেলপমেন্টের তত্ত্বাবধান করে থাকেন।
এ উপলক্ষে রাজধানীর স্থানীয় একটি পাঁচতারকা হোটেলে এক জমকালো অনুষ্ঠান আয়োজন করে রিমার্ক।
এতে উপস্থিত ছিলেন রিমার্ক ফুলফিলমেন্টের সিইও এমদাদুল হক সরকার, রিমার্ক এইচবির ডিরেক্টর (অপারেশন) আলমগীর আলম সরকার, অ্যাসোসিয়েশন অব স্কিন কেয়ার অ্যান্ড বিউটি প্রোডাক্টস ম্যানুফ্যাকচারারস অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স বাংলাদেশের জেনারেল সেক্রেটারি জামাল উদ্দীন, জনপ্রিয় চিত্রনায়ক মামনুন হাসান ইমন, চিত্রনায়ক সিয়াম আহমেদ, জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী তাহসান খান ও রিমার্ক পরিবারের সদস্যরা।
এক ভিডিও বার্তার মাধ্যমে অনুষ্ঠানে সংযুক্ত হন বিএসটিআই মহাপরিচালক এসএম ফেরদৌস আলম।
তিনি বলেন, ‘‘কিছুদিন আগেই বিএসটিআই প্রতিনিধিদলের সঙ্গে আমি রিমার্কের ম্যানুফ্যাকচারিং প্ল্যান্ট পরিদর্শন করে এসেছি। আমি সত্যিই অভিভূত হয়েছিলাম তাদের স্টেট অব দ্য আর্ট ব্যবস্থাপনা দেখে। আজকে তাদের এই অর্জনে আমি আনন্দিত, আমি আশা করব তারা তাদের এই জিএমপি সার্টিফিকেটের সঙ্গে সঙ্গে তাদের আগামী দিনের পথচলায় আরও অনেক প্রাপ্তি যোগ করবে ও সারা বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করে তুলবে।’’
রিমার্ক-হারল্যানের ডিরেক্টর মেগাস্টার শাকিব খান বলেন, ‘‘আজকে আমাদের জন্য একটি অত্যন্ত আনন্দের দিন। সব ধরনের কমপ্লায়েন্স স্ট্যান্ডার্ড মেনে অনেক স্বল্প সময়ে সম্মানজনক এই সনদটি পেতে সক্ষম হয়েছে রিমার্ক, যা দেশের জন্য বড় মাইলফলক। রিমার্ক-হারল্যানের ডিরেক্টর হিসেবে আমি গর্বিত। শুধু আমদানি বিকল্পই নয়, রপ্তানি বাজারে বাংলাদেশের শক্তিশালী অবস্থান নিশ্চিত করার মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়াতেও ভূমিকা রাখবে রিমার্ক-হারল্যান। জিএমপি মান সনদ আমাদের সেই লক্ষ্য অর্জনে এগিয়ে নিয়ে যাবে।’’
তিনি বলেন, ‘‘এত দ্রুততম সময়ে জিএমপি সনদ অর্জন বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়ার কসমেটিকস ইন্ডাস্ট্রিতে নেতৃত্বের আসনে বসার সুযোগ এনে দিয়েছে। কসমেটিকস ইন্ডাস্ট্রিতে বাংলাদেশ শুধু দক্ষিণ এশিয়াতেই নয়, সারা বিশ্বে নেতৃত্ব দেবে একদিন। সেদিন আর বেশি দূরে নয়।’’
শাকিব খান আরও বলেন, ‘‘আমরা যুক্তরাষ্ট্র ও ফিলিপাইন থেকে রপ্তানি আদেশ পেয়েছি। আজ আপনাদের সামনেই এ আদেশ অনুমোদন করেছি। এটাই প্রমাণ করে যে, বিশ্বের কসমেটিকস ও স্কিনকেয়ার ইন্ডাস্ট্রিতে বাংলাদেশ নতুন মাইলফলক অর্জন করল। রিমার্কে আজ লাখ লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হচ্ছে। রপ্তানি হচ্ছে আমাদের পণ্য। সারা পৃথিবীর মানুষ ব্যবহার করবে আমাদের পণ্য। এরচেয়ে আনন্দের আর কি হতে পারে? এর শুরুটা আমার হাত দিয়ে হলো। আজ আমি খুবই আবেগাপ্লুত।
আমার ইমোশন ধরে রাখতে পারছি না। আপনাদের সবার সহযোগিতায় একদিন বিশ্বে ট্রিলিয়ন ডলার কসমেটিকস ইন্ডাস্ট্রির অংশীদার হতে যাচ্ছি আমরা। দেশে-বিদেশে সবাইকে বলবো-যিনি আমাদের পণ্য কিনবেন, তিনি নিশ্চিন্তে ব্যবহার করতে পারবেন। সবচেয়ে নিরাপদ ও সেরা পণ্য আমাদের। এমন অথেনটিক পণ্যই আমরা উৎপাদন করছি। তাই আসুন, সবাই দেশকে নিয়ে গর্ববোধ করি।’’
গুড ম্যানুফ্যাকচারিং প্র্যাকটিস (জিএমপি) হলো-একটি ব্যবস্থা যা নিশ্চিত করে যে প্রস্তুতকৃত পণ্যগুলো ধারাবাহিকভাবে গুণগত মানদণ্ড অনুযায়ী উৎপাদিত ও নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে। যেসব প্রতিষ্ঠান নির্দিষ্ট এসব মানদণ্ড নিয়মিতভাবে পরিপালন করার মাধ্যমে তাদের কার্যপ্রক্রিয়া চালিয়ে যেতে পারে, শুধু তারাই অর্জন করে বহুল কাঙ্ক্ষিত গুড ম্যানুফ্যাকচারিং প্র্যাকটিস (জিএমপি) সার্টিফিকেট। সূচনালগ্ন থেকেই সর্বোচ্চ গুণগতমানসম্পন্ন উপাদান ব্যবহার করা সর্বাধুনিক প্রযুক্তিতে দেশের সবচেয়ে ক্লিন ও পরিবেশবান্ধব ফ্যাক্টরিতে নিজেদের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে রিমার্ক। এরই ধারাবাহিকতায় দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে দ্রুততম সময়ে রিমার্ক অর্জন করেছে এই গুড ম্যানুফ্যাকচারিং প্র্যাকটিস (জিএমপি) সার্টিফিকেট। ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ (ইইউ) পশ্চিমা দেশগুলোতে কসমেটিকস পণ্য উৎপাদন থেকে ভোক্তার কাছে পরিবেশন পর্যন্ত যেসব মানদণ্ড আবশ্যকীয় তার মধ্যে জিএমপি অন্যতম। এর ফলে বিশ্ব বাজারে রিমার্কের বাংলাদেশে উৎপাদিত পণ্য রপ্তানিতে আরও একধাপ এগিয়ে গেল।
রিমার্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আশরাফুল আম্বিয়া বলেন, ‘‘এটি দেশের জন্য একটি গর্বের মুহূর্ত, কারণ, এই অর্জন বাংলাদেশের প্রসাধনী শিল্পের অগ্রগতিকে নিশ্চিত করে। বাংলাদেশে এখন রপ্তানির উপযোগী উচ্চপ্রযুক্তির কসমেটিকস পণ্য তৈরি হচ্ছে। তিনি জানান, ইতোমধ্যে বহু দেশে রপ্তানি অর্ডার নিয়ে কাজ করছে রিমার্ক। অচিরেই অন্যতম রপ্তানি খাত হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাবে এই সেক্টর।’’
অ্যাসোসিয়েশন অব স্কিন কেয়ার অ্যান্ড বিউটি প্রোডাক্টস ম্যানুফ্যাকচারারস অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স বাংলাদেশের (এএসবিএমইবি) জেনারেল সেক্রেটারি জামাল উদ্দীন রিমার্কের প্রযুক্তিগত দক্ষতার ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, ‘সর্বাধুনিক প্রযুক্তিতে তৈরি পণ্য উৎপাদন করে এক দৃষ্টান্ত উপস্থাপন করেছে রিমার্ক। রিমার্ক আমাদের অ্যাসোসিয়েশনের এক অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। তাদের এই কৃতিত্বে আমরা আনন্দিত ও গর্বিত। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, রিমার্ক তাদের এই পেশাদারিত্বের মাধ্যমে আরও বহুদূর এগিয়ে যাবে। একইসঙ্গে কসমেটিকস ও স্কিন কেয়ার খাতে বাংলাদেশ বিশ্বব্যাপী দাপট দেখাতে পারবে এবং এই সেক্টরের সমৃদ্ধি অর্জন দেশের অর্থনীতিতে বড় অবদান রাখবে।’’
বিশিষ্ট ডার্মাটোলজিস্ট ডা. শারমিনা হক বলেন, ‘‘রিমার্কের এই প্রাপ্তি দেশের মানুষের ত্বক সুরক্ষায় নতুন একটি মাত্রা যুক্ত করল। যথাযথ নিয়ম মেনে আন্তর্জাতিক প্রটোকল অনুযায়ী পণ্য উৎপাদন করায় রিমার্ককে আমরা ধন্যবাদ জানাচ্ছি। ভোক্তাদের কাছে অথেনটিক পণ্য পৌঁছে দিতে রিমার্কের চলমান উদ্যোগের প্রতি আমাদের আস্থা আরও বেড়ে গেল। এটা সত্যিই একটি গর্বের বিষয় যে, রিমার্ক অথেনটিক কসমেটিকস পণ্য উৎপাদনে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। তাদের এই প্রাপ্তি আমাদেরও গর্বিত করেছে। ভেজাল-নকল প্রতিরোধে এটি বাংলাদেশের ভোক্তাদের জন্য একটি মাইলফলক।’’
বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা. ইয়াজদান রেজা চৌধুরী বলেন, ‘‘বিশ্ব বাজারে বাংলাদেশের অবস্থান সমুন্নত করার ক্ষেত্রে আরও একধাপ এগিয়ে গেল রিমার্ক। আশা করছি, একদিন বিশ্বের সেরা পণ্য উৎপাদনকারী দেশ হয়ে উঠবে বাংলাদেশ।’’
জনপ্রিয় সংগীত শিল্পী তাহসান বলেন, ‘‘পৃথিবীর সেরা পণ্য উৎপাদন করছে রিমার্ক-হারল্যান। এত ভালো পণ্য আমাদের দেশে তৈরি হচ্ছে ভাবতেই আনন্দ লাগে। কসমেটিকস ইন্ডাস্ট্রিতে একদিন বিশ্বে বাংলাদেশের নাম হবে শীর্ষে। রিমার্ক-হারল্যান তাই আমাদের গর্ব।’’
জনপ্রিয় চলচ্চিত্র অভিনেতা সিয়াম আহমেদ বলেন, ‘‘জিএমপি সনদপ্রাপ্তি এটাই বোঝাচ্ছে যে, বিশ্ব কসমেটিকস বাজারের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। উন্নত বিশ্বের সঙ্গে প্রতিযোগিতা সক্ষমতা অর্জন করে যাচ্ছে। এটি আমাদের জন্য অত্যন্ত গর্বের। আজকের এই দিনে রিমার্কের সঙ্গে জড়িত প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সবাইকে কৃতজ্ঞতা জানাতে চাই, এমন একটি সুন্দর মুহূর্ত এনে দেওয়ার জন্য।’’
জাঁকজমকপূর্ণ এই আয়োজনে দেশের সব অঙ্গনের তারকাদের বর্ণিল উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। ছিলেন বাংলাদেশ ক্রিকেট জগতের সুপারস্টার খালেদ মাহমুদ সুজন এবং বিসিবির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা আসিফুল বিলাশ ও সাইফুল আমিন। চিত্রনায়িকা পূজা চেরী, সংগীতশিল্পী কোনাল, মডেল মিম মানতাশা, রুকাইয়া জাহান চমক, ইরফান সাজ্জাদ, প্রার্থনা ফারদিন দীঘি, সেমন্তি সৌমি, তাহিয়া খান আয়েশা, নাবিলা ইসলাম, সারিকা সাবার মতো মিডিয়া ও সংগীত জগতের জনপ্রিয় সব তারকা।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের মানুষের জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধি করার প্রয়াসে কাজ করে যাচ্ছে রিমার্ক-হারল্যান। নকল ও ভেজালমুক্ত পণ্য ব্যবহার করে দেশের মানুষ যাতে গ্লোবাল স্ট্যান্ডার্ড অব লিভিং অনুযায়ী সবরকম সুযোগ সুবিধা পেতে পারে তাই রিমার্কের লক্ষ্য। রিমার্ক-হারল্যানের সঙ্গে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন মেগাস্টার শাকিব খান, জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী ও অভিনেতা তাহসান, জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা পরীমনি, বিদ্যা সিনহা মিম, নুসরাত ফারিয়া, তানজিন তিশা, নাজিফা তুষি, সাবিলা নূর, কেয়া পায়েল, প্রার্থনা ফারদিন দিঘী, পূজা চেরি, চিত্রনায়ক মামনুন হাসান ইমন ও সিয়াম আহমেদের মতো জনপ্রিয় এবং দর্শকনন্দিত মিডিয়া ব্যক্তিত্ব।
রিমার্ক-হারল্যান ইতোমধ্যে বেশ কিছু পুরস্কারও লাভ করেছে। পরপর দু’বার ইউএস ট্রেড শোতে সেরা প্যাভিলিয়নের পুরস্কার পায় এ প্রতিষ্ঠানটি।