ম্যান অব দ্য ম্যাচ নিগার সুলতানা জ্যোতি। পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে নিজের নাম শুনতে পেয়ে বাংলাদেশ নারী দলের অধিনায়ক জ্যোতি নিজেও অবাক। ভেবেছিলেন ফিফটি পাওয়া ফারজানা হক পিংকি হবেন আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডে জয়ের নায়ক। কিন্তু বিচারকরা ৩৯ বলে ৪০ রান করা জ্যোতিকে বেছে নেন ম্যাচসেরা হিসেবে।
আয়ারল্যান্ডকে ৫ উইকেটে হারিয়ে বাংলাদেশ এক ম্যাচ হাতে রেখে জিতে নিয়েছে ওয়ানডে সিরিজ। আয়ারল্যান্ডের দেওয়া ১৯৪ রানের লক্ষ্য ৩৭ বল হাতে রেখে ছুঁয়ে ফেলে বাংলাদেশ। দেশের মাঠে যা বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড। ম্যাচ শেষে বাংলাদেশের অধিনায়ক এসেছিলেন সংবাদ সম্মেলনে। সেখানে সিরিজ নিয়ে নানা প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন…
কোনটা বেশি আনন্দের? সিরিজ জয় নাকি আইসিসি ওমেন্স চ্যাম্পিয়নশিপের আরও ২ পয়েন্ট পাওয়া? নিগার সুলতানা: ২ পয়েন্ট পাওয়া। সিরিজ জয় অবশ্যই দলের জন্য অনেক ভালো। একটা ছন্দ তৈরি করা। পয়েন্টটাই আমাদের কাছে এখন বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আরও ২টা পয়েন্ট পেলাম। এজন্য আরও বেশি খুশি।
ম্যাচসেরা হয়ে কেমন লাগছে? নিগার সুলতানা: একদম হুট করে (ম্যাচসেরা)। আমি পুরোপুরি সারপ্রাইজড। আমার মনে হয়েছিল, পিংকি আপু হবেন। এটাও আসলে ম্যাটার করে না। দলের জয়ে অবদান রাখতে পেরেছি, এটাই গুরুত্বপূর্ণ। ম্যাচটা শেষ করতে পারলে ভালো লাগত।
আজ দুইশর আশেপাশে রান তাড়া করে জয় পেলেন। এরকম রান হলেই কি আসলে ব্যাটসম্যানদের জন্য স্বস্তি আসে? নিগার সুলতানা: আজ উইকেট অনেক ভালো ছিল। সকালে হয়তো একটু নিচু ছিল। পরে ভালো হয়ে গেছে। আমার মনে হয়, আয়ারল্যান্ড গত ম্যাচের চেয়ে আজকে ভালো খেলেছে। তবে আমরা যদি বোলিংটা আরেকটু ভালো করতে পারতাম, ২০-৩০ রান কমতো। আমাদের জন্য আরেকটু ভালো হতো। তবে আমরা যেভাবে শুরু করেছি, পিংকি আপু ধারাবাহিক ছিলেন, আজকে তার ইন্টেন্ট ভিন্ন ছিল। সুপ্তা আপু আবার ভালো অবদান রেখেছেন। সব মিলিয়ে ব্যাটাররা যখন ভালো রান করে, দলের জন্য একটা ভালো ইমপ্যাক্ট ফেলে।
আজকের ম্যাচে আপনাদের মূল মনোযোগের জায়গাটা কোথায় ছিল? নিগার সুলতানা: আজ সকালে আমি ক্রিকেটারদের যে বার্তাটা দিয়েছি, ধারাবাহিক হতে পারাই মূল। প্রথম ম্যাচে আমরা যে রানটা করেছি, সেটা যদি করতে পারি। অথবা যারা রান করেছি, তারা যদি আজকে না করতে পারি, তাহলে কিন্তু আসলে ওইভাবে মূল্যায়ন করা যায় না। তাই ধারাবাহিকতা যেন বজায় থাকে, সেটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আর দৃশ্যমান যে সমস্যাটা ছিল, শুধু ব্যাটিং এর কারণে অনেক ম্যাচ হেরে যাচ্ছিলাম। সে জায়গা থেকে ব্যাটারদের রান করতে পারা দলের জন্য স্বস্তির। তবে আবারও একটা প্রশ্ন, এটা আমরা পরের ম্যাচে করতে পারব কিনা। এটা আমাদের জন্য একটা চ্যালেঞ্জ, যেন পরের ম্যাচেও এরকম ব্যাটিং করতে পারি।
প্রথম ম্যাচে দুটি রেকর্ড হয়েছে। আজও হয়েছে। দেশের মাটিতে সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়… নিগার সুলতানা: আমরা যা করছি, রেকর্ড হয়ে যাচ্ছে। এটা হলো বিষয় (হাসি)। হয়তো আগে করতে পারিনি, এই কারণে হচ্ছে। ভালো লাগে। দলটা দেখেন, অনেক দিন ধরে এই ক্রিকেটাররা অনেক কষ্ট করছে। ম্যাচ জিততে না পারায় অনেক সময় নেতিবাচকতা বেশি থাকে। দলকে উজ্জীবিত করার যতোই চেষ্টা করেন না কেন, ওইটা থাকে। তবে দলের জন্য জয় অনেক বড় ব্যাপার। খারাপ করলে অনেক কিছু চলে আসে যে এটা নেই, ওটা ভালো না। এখনও যে খারাপ কিছু নেই, তা নয়। তবে ভালোর পরিমাণটাই এবার বেশি।
শেষ ম্যাচে কি পরিকল্পনা থাকবে? নিগার সুলতানা: আমাদের মাথায় আপাতত ২ পয়েন্ট। এর সঙ্গে হচ্ছে, আমরা যেন তাদের হোয়াইটওয়াশ করতে পারি। কখনও কোনো দলকে করতে পারিনি। এটা আমাদের দলের জন্য একটা মাইলফলক হবে। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হবে, দল হিসেবে খেলা, প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ক্রিকেট খেলা এবং যাকে যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, সেটা যদি করতে পারে, তাহলে দিনটা আমাদের হবে।