আন্তর্জাতিক

তামিলনাড়ুতে ঘূর্ণিঝড় ফিনজালের ‘ল্যান্ডফল’ শুরু

ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যের পুদুচেরিতে সৈকতে আছড়ে পড়তে (ল্যান্ডফল) শুরু করেছে ঘূর্ণিঝড় ফিনজাল। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে বলছে, আগামী ৩-৪ ঘণ্টা এটি সৈকত এলাকায় তাণ্ডব চালাবে।

ভারতের আবহাওয়া অফিস আইএমডি জানিয়েছে, তামিলনাড়ুর কারাইকাসল ও পুদুচেরির খুব কাছের মহাবলিপুরমের মধ্যে ল্যান্ডফল করবে ‘ফেঙ্গাল’। ৭০ থেকে ৮০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টায় বেগে আঘাত হানতে পারে ঘূর্ণিঝড়টি।

ইতিমধ্যে চেন্নাই, কুড্ডালোর, তিরুভাল্লুর, কাঞ্চিপুরম, কাল্লাকুরিচি এবং পুদুচেরী জেলায় ভারী বৃষ্টি শুরু হয়ে গেছে। ফুঁসছে সমুদ্র। উপকূলবর্তী এলাকা থেকে বহু মানুষকে সরিয়ে ত্রাণ শিবিরে পাঠানো হয়েছে। রোববার ভোর ৪টা পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে চেন্নাই বিমানবন্দর। বাতিল করা হয়েছে ৫৫টি বিমান। বিঘ্নিত ট্রেন পরিষেবা।

ভারী বৃষ্টিতে চেন্নাইয়ের বিভিন্ন এলাকায় পানি জমেছে। এটিএমে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে এক ব্যক্তির। তামিলনাড়ু ও পুদুচেরির উপকূলে রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে স্কুল, কলেজ, অফিস। 

তামিলনাড়ু সরকার আইটি সংস্থাগুলোকে তাদের কর্মীদের আজ বাড়ি থেকে কাজ করার অনুমতি দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।

তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্টালিন চেন্নাইয়ের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে স্টেট ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টারে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেছেন। তিনি গণমাধ্যমকে বলেছেন, ইতিমধ্যে সতর্কতামূলক সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় দুই হাজারের বেশি ত্রাণশিবির খোলা হয়েছে। তিরুভারুর ও নাগাপট্টিনাম জেলার ত্রাণশিবিরগুলোতে ইতিমধ্যে প্রায় ৫০০ জন লোককে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে খাবারও বিতরণ করা হয়েছে। একাধিক হেল্পলাইন নম্বর চালু করা হয়েছে।

এ ছাড়াও তামিলনাড়ুর উপমুখ্যমন্ত্রী উদয়নিধি স্টালিন ঘূর্ণিঝড় ফিনজাল ল্যান্ডফলের কয়েক ঘণ্টা আগে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার বর্তমান পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেছেন।

সতর্কতামূলক ব্যবস্থার অংশ হিসাবে রাজ্য সরকার গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে গণপরিবহন পরিষেবাও স্থগিত করেছে। পুদুচেরি জেলা প্রশাসন ল্যান্ডফলের আগে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে শনিবার সন্ধ্যা এবং রাতের জন্য প্রেক্ষাগৃহে চলচ্চিত্র প্রদর্শন স্থগিত করার নির্দেশ দিয়েছে।

স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলে মোটর পাম্প, জেনারেটর ও নৌকাসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম মোতায়েন করেছে। ভারতীয় নৌবাহিনীর বন্যা ত্রাণ দলগুলোও ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় অবস্থান নিয়েছে।

তামিলনাড়ু সরকার বিলবোর্ড ও বিজ্ঞাপন হোর্ডিং অপসারণ করেছে, যাতে পতনশীল বস্তুর কারণে দুর্ঘটনা ঘটে না।

জনপ্রিয় পর্যটন স্পট পুদুচেরি সৈকতে যাওয়ার প্রধান সড়কসহ বেশ কয়েকটি পর্যটন স্থান বন্ধ করে দিয়েছে তামিলনাড়ু সরকার।